‘বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরুদণ্ড যারা শক্ত করে গড়ে তুলেন তাদের একজনের গলায় জুতার মালা পরানো মানে পুরো জাতির গলায় জুতার মালা পরানো। তাই নড়াইলে শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে পুরো জাতিকেই অপমান করা হয়েছে।’
সাম্প্রদয়িক উস্কানি ছড়িয়ে নড়াইলে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে নির্যাতন ও সাভারের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে সিলেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এমনটিই বলেছেন বক্তারা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশের আগে একটি প্রতিবাদ মিছিল নগরীর রিকাবিবাজার এলাকার কবি নজরুল অডিটোরিয়াম থেকে শুরু হয়ে শহিদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সুনির্মল দেব বলেন, সারা দেশেই একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। তাদের টার্গেট এখন শিক্ষাঙ্গন। দেশের নানা জায়গায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়িয়ে শিক্ষকদের অপদস্ত ও হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার পথে অন্তরায়। এদের পরাজিত করতে না পারলে বাংলাদেশের মূল চেতনাই পরাজিত হবে।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশুর সভাপতিত্বে ও সম্মিলিতি সাস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা স্বপন কুমার বিশ্বাসকে নির্যাতন ও উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সিলেটের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন একাত্মতা পোষণ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রানা সিনহা, নাট্য ব্যক্তিত্ব নিরঞ্জন দে, শামসুল বাসিত শেরো, নাট্য পরিষদের সাবেক সভাপতি অনুপ কুমার দেব, সাবেক সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মঈন উদ্দিন মনজু, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ, নৃত্যশিল্পী নিলাঞ্জনা দাশ জুঁই, বাউল বশির উদ্দিন সরকার, শিক্ষক উজ্জ্বল দাশ, প্রণবকান্তি দে প্রমুখ।