শ্রীলঙ্কায় চলতে থাকা সংকটে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছে তামিল নাড়ু ভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দল।রবিবার ভারত সরকার জানিয়েছে,এই ইস্যুতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠক হবে।বৈঠকে ব্রিফিং করবেন কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ও ড. এস জয়শঙ্কর।
গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পড়েছে ভারতের প্রতিবেশি দেশ শ্রীলঙ্কা।ভারতের পার্লামেন্টের মৌসুমী অধিবেশন সামনে রেখে দলগুলোর এক বৈঠকে প্রতিবেশি দেশটিতে হস্তক্ষেপের দাবি তোলে তামিল নাড়ু ভিত্তিক দল ডিএমকে এবং এআইএডিএমকে।
বৈঠকে উভয় দলই শ্রীলঙ্কার তামিল জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির বিষয়টি তুলে ধরে।আর এই তথ্য জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্র সরকারের শরিক দল এআইএডিএমকে এর নেতা এম থাম্বিদুরাই এবং তামিল নাড়ুর শাসক দল ডিএমকে নেতা টিআর বালু।
বিভিন্ন মাধ্যমে সহায়তা পাঠানো বাদ রাখলে শ্রীলঙ্কা সংকটে ভারত এখন পর্যন্ত মূলত হাত গুটিয়ে রয়েছে।গত সপ্তাহে সতর্ক এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,ভারত শ্রীলঙ্কার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে কারণ তারা গণতান্ত্রিক উপায় ও মূল্যবোধ, প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মাধ্যমে তাদের সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতির আকাঙ্ক্ষা অর্জন করতে চায়।
দ্বীপরাষ্ট্রটিকে আর্থিক সহায়তা পাঠানোর দিকে ইঙ্গিত করে বিবৃতিতে বলা হয় ভারতের প্রতিবেশিত্ব প্রথম নীতির আওতায় শ্রীলঙ্কার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শ্রীলঙ্কার নিকটতম প্রতিবেশি ভারত আর আমাদের দুই দেশের মধ্যে সভ্যতাগত গভীর বন্ধন রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার আন্দোলন রবিবার শততম দিন পার করেছে।ইতোমধ্যেই বিক্ষোভকারীরা এক প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব থেকে তাড়িয়েছে আর এখন তার উত্তরসূরির দিকে নজর ফিরিয়েছে।অর্থনৈতিক সংকট অবসানের কোনও দৃশ্যত অগ্রগতিও নেই।
গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে প্রবেশ করার কিছুক্ষণ আগে সেখান থেকে পালিয়ে যান গোটাবায়া রাজাপাকসে।সিঙ্গাপুরে পৌঁছে বৃহস্পতিবার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি।আর্থিক সংকটের জন্য তার অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ।এই সংকটের কারণে গত বছর থেকে দেশটির দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ খাবার,জ্বালানি, ওষুধ সংকটে ভুগছে।
শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী রাজাপাকসে পদত্যাগের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। আর এখন আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্থায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম শীর্ষ প্রার্থী তিনি।
রাজাপাকসের পদত্যাগের পর বিক্ষোভের কয়েকটি স্থান খালি করে দেওয়া হয়েছে।দখলে নেওয়া তিনটি সরকারি ভবন ছেড়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।এগুলো হচ্ছে দুইশ’ বছরের পুরনো প্রেসিডেন্টের বাসভবন,প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং তার কার্যালয়।
শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বিক্রমাসিংহে।আর প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,ভোট গ্রহণের আগে পার্লামেন্টের নিরাপত্তা বাড়াতে সোমবারই রাজধানীতে অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হবে।