প্রস্তাবিত বাজেটে মেডিটেশনের ওপর ভ্যাট স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। তারা বলছেন, মেডিটেশন বা ধ্যান মানসিক স্বাস্থ্য সেবা হিসেবে বিবেচিত। স্বাস্থ্যসেবা যেহেতু ভ্যাটমুক্ত, তাই মেডিটেশনের ওপর থেকেও ভ্যাট প্রত্যাহার করা জরুরি।
সম্প্রতি চলতি বাজেট বক্তৃতায় নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, আপদকালীন বরাদ্দ বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে হবে। মেডিটেশন সেবা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্যসেবা ভ্যাটের আওতামুক্ত। মেডিটেশন সেবাকেও স্বাস্থ্যসেবা হিসেবে স্থায়ীভাবে ভ্যাটের আওতামুক্ত করার আবেদন করছি।
পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদ বাজেট বক্তৃতায় বলেন, কোভিডের কারণে অনেকের অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। এই যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, এটা নেওয়ার জন্য মেডিটেশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ মেডিটেশনের ওপর আবার ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এই দুটি জিনিস পরস্পরবিরোধী হয়ে যাচ্ছে। একদিকে সিগারেটের ওপর ভ্যাট কম হচ্ছে, কর কম হচ্ছে, অন্যদিকে মানসিক স্বাস্থ্য চর্চার জন্য যে মেডিটেশন, তার ওপর আবার ভ্যাট বসানো হচ্ছে। আমি মনে করি, মানসিক স্বাস্থ্য থেকে ভ্যাট বসিয়ে ইনকামের যে টার্গেট নেওয়া হয়েছে, সেই টার্গেটই যদি আবার সিগারেটের ওপরে আরও চড়াও করে দেওয়া হয়, তাহলে সে টার্গেটটা অন্তত পূরণ হবে। এই দুটো জিনিস অর্থমন্ত্রীকে বিবেচনা করার জন্য স্পিকারের মাধ্যমে আবেদন করছি।
ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন তার বাজেট বক্তৃতায় প্রশ্ন রেখে বলেন, মেডিটেশন মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন, বিধায় একে করের বাইরে রাখা প্রয়োজন। কোভিড প্রতিক্রিয়ায় মানুষের মন যখন বিপর্যস্ত, সেখানে মেডিটেশনের আশ্রয় নিলে তাকে কে বেশি মূল্য দিতে হবে?
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রহুল হক বলেন, মেডিটেশনে ট্যাক্স দেওয়া হয়েছে। সেটা কমিয়ে গতবারের মতো জিরো করার জন্য আমি আহ্বান জানাই।
খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার বক্তব্যে বলেন, মেডিটেশনের ওপরে একটি শুল্ক ধার্য হতে যাচ্ছে। এ শুল্ক যাতে ধার্য না হয়, সে দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া সংসদের বাজেট বক্তৃতায় মেডিটেশনের ওপর থেকে ভ্যাট আরোপ প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রস্তাব করেন বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ।
মেডিটেশন সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। অথচ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের জন্য প্রকাশিত উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসার গাইডলাইনে যৌথভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন জীবনধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি মেডিটেশন, যোগ ব্যায়াম ও প্রাণায়াম চর্চার কথা বলেছে।