রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেল থেকে জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীক (২৭) নামে এক নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এই নারী ডাক্তারের দীর্ঘদিনের প্রেমিক রেজাউলকে আসামি করে খুনের মামলা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ রেজাউলই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পান্থপথে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, জান্নাতুল মগবাজারে কমিনিউটি হাসপাতাল থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদী। জান্নাতুল তার মায়ের সঙ্গে ঢাকার শাহজাহানপুরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। জানা যায়, রেজাউল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল জান্নাতুলের। তবে সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জান্নাতুলের পরিবার মেনে নিতে অস্বীকার করলে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। রেজাউল আগে একটি ব্যাংকে চাকরি করলেও বর্তমানে তিনি বেকার। তারা প্রায় সময় বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে রাত্রীযাপন করতেন।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ফ্যামেলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের (আবাসিক হোটেল) ৩০৫ নম্বর রুমে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রুম বুকিং করেন জান্নাতুল ও রেজাইল। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রুমে তালা দিয়ে বাইরে যায় রেজাউল। এ সময় হোটেলের ম্যানেজার রেজাউলকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান খাবার আনতে যাচ্ছেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে রেজাউল হোটেলে ফিরে না এলে ম্যানেজার তাকে ফোন করে জানতে চান, তার স্ত্রীকে রুমের মধ্যে তালাবদ্ধ করে তিনি এখনো আসেন না কেন! রেজাউলের বাহিরে কাজ শেষ করে আসবেন বলে ম্যানেজারকে জানান।
পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ম্যানেজার রেজাউলকে আবার কল দিলে তিনি মোবাইল বন্ধ করে দেন। এতে হোটেল ম্যানেজারের সন্দেহ হলে বিষয়টি অন্যদের জানান এবং পরে পুলিশকে খবর দেন।
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হোটেলের ৩০৫ নম্বর রুম থেকে নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় হোটেলের ওই কক্ষ থেকে একটি ধারালো ছুরিও জব্দ করা হয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় রাতেই নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রেজাউলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রেজাউলকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। তার মতে রেজাউলকে ধরতে পারলেই এই খুনের সব রহস্য খোলাসা হবে।