ইউক্রেনে টানা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। সর্বাত্মক এই রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় দেশটি পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তা পেলেও ইউক্রেন কার্যত বিপর্যস্ত। আর এর মধ্যেই এবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘সরাসরি আলোচনার’ ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
মূলত চলমান এই যুদ্ধ অবসানে সহায়তার জন্যই জিনপিংয়ের মুখোমুখি বসতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে নিজেদের চলমান যুদ্ধ অবসানে সহায়তার প্রত্যাশায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে ‘সরাসরি’ কথা বলার সুযোগ খুঁজছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেই একথা জানিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট খবর প্রকাশ করেছে।
এসসিএমপির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়ার ওপর বেইজিংয়ের বিশাল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করার জন্য চীনকে অনুরোধও করেছেন।
জেলেনস্কির উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন অত্যন্ত শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র। দেশটির একটি শক্তিশালী অর্থনীতি রয়েছে … তাই (চীন) রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। এবং চীন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যও।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।
বিবিসি বলছে, রাশিয়া মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প এলাকা ডনবাস দখল করতে চাইছে। এই ভূখণ্ডটি লুহানস্ক এবং দোনেতস্ক নামে দু’টি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। সেখানে রুশপন্থি দু’টি বিদ্রোহী স্ব-ঘোষিত রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
যুদ্ধ শুরুর পর পাঁচ মাসের বেশি সময়ে ইউক্রেনে হাজারও মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ ঘর-বাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন। এছাড়া রুশ আগ্রাসনে ইউক্রেনের সামরিক-বেসামরিক অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।