ভারতের মাটির ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপটা সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ শুরু করেছে দাপুটে জয় দিয়ে। বিপরীতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের শুরুটা হয়েছে হতাশাজনকভাবে। উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি ইংলিশরা। আজ এই ইংল্যান্ডই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। সুতরাং আজ ধর্মশালায় মাঠের লড়াই শুরুর আগে নিশ্চিতভাবেই মানসিকভাবে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বাংলাদেশ। যত চাপ, সবটুকুই জশ বাটলারের ইংল্যন্ডের কাঁধে।
আত্মবিশ্বাসে উড়তে থাকা বাংলাদেশ আজ আরো একটি সুবিধা পাবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচটি এই ধর্মশালাতেই খেলেছে। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত প্রস্তুতির শেষ প্রলেপটাও বাংলাদেশ দিয়েছে এই ধর্মশালাতেই। কাজেই ধর্মশালার কন্ডিশন, মাঠ, পিচ—সবকিছু সম্পর্কেই মোটামুটি একটা ধারণা অর্জন হয়েছে সাকিবের দলের। অন্যদিকে ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচটা খেলেছে আহমেদাবাদে। ঐ ম্যাচ খেলেই তারা ধর্মশালায় এসেছে। কাজেই ধর্মশালার মাঠ, উইকেট, কন্ডিশন সম্পর্কে সাকিবদের মতো ইংলিশদের প্র্যাকটিক্যাল ধারণা নেই।
তবে এসব আনুষঙ্গিক সুবিধার পাশাপাশি বাস্তবতাটাও চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশ দল ক্রিকেটে যতই উন্নতি করুক, এখনো ক্রিকেটীয় শক্তিতে ইংল্যান্ডের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে। ওপরের সুবিধাদির পরও তাই আজকের দ্বৈরথে জশ বাটলারের ইংল্যান্ডই ফেবারিট। সামগ্রিক পরিসংখ্যানও সে কথাই বলছে। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ২৪ বার। তার মধ্যে বাংলাদেশ জয়োত্সব করেছে মাত্র ৫টিতে। বাকি ১৯টি ম্যাচেই জয়ের আনন্দ-উদ্যাপনটা ইংলিশরা নিজেদের মতো করে করেছে। তাছাড়া প্রথম ম্যাচে হারায় তাদের অবস্থা এখন আহত-ক্ষুধার্ত বাঘের মতো। নিশ্চিতভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে জশ বাটলার বাহিনী আজ বাংলাদেশের ওপর আহত বাঘের মতোই ঝাঁপিয়ে পড়বে।
বাংলাদেশও যে তাদের ছেড়ে কথা বলবে না, সেটি অনুমিতই। অধিনায়ক সাকিব আগেই বলেছেন, ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা সাজাবেন তারা। তো ইংল্যান্ডের ম্যাচ নিয়ে সাকিবদের পরিকল্পনা কি, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। কারণ, গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব তা দলের কোনো ক্রিকেটার আসেননি। খেলোয়াড়দের পরিবর্তে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধ হয়ে এসেছিলেন স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। তিনি শুধু এতটুকু বলেছেন, মানসম্পন্ন ক্রিকেট খেলাই লক্ষ্য থাকবে দলের। প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে দলগত পারফরম করেছে, আজও লক্ষ্য থাকবে সেভাবেই খেলার। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার-আজও লক্ষ্য জয়।
যদি লক্ষ্যটা পূরণ হয়, আজও যদি জয়োল্লাস করতে পারেন সাকিবরা, তাহলেও পরিসংখ্যানের একটা অধ্যায়ে ইংলিশদের পেছনে ফেলে দিতে পারবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ মঞ্চে এর আগে মোট ৪ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। সেই ৪ ম্যাচের দুটিতে জিতেছে বাংলাদেশ, দুটিতে জয় ইংলিশদের। মানে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড দ্বৈরথে সমতা। আজ যারা জিতবে, এই পরিসংখ্যানে এগিয়ে যাবে তারাই। সাকিবরা পারবেন জয়ের ধারা ধরে রেখে পরিসংখ্যানের এই অধ্যায়টা নিজেদের পক্ষে নিতে?