ফরিদ সুমন:-
মানব সেবায় নিবেদিত প্রাণ কোমল হৃদয়ের অধিকারী লায়লা হারুন, তার কমিউনিটিতে মা ও শিশুদের প্রয়োজনে মাতৃ-হৃদয় নিয়ে এগিয়ে এসে তাদের সব দায়িত্ব নিজ কাদে তুলে নেন শাশ্বত মাতৃ মমতায়।
মা ও শিশুদের মাতৃমমতায় ভাসাতে প্রতিষ্ঠা করেছেন “মা ও শিশু” সংগঠন, এর মাধ্যমে তিনি অগনতি মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন মাতৃস্নেহের ছায়া। স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে দিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা, বাড়িয়েছেন স্বাস্থ্য সচেতনতা। পারিবারিক নির্যাতন থামিয়ে দৃঢ় করেছেন বন্ধন, জয় করেছেন অগণন মানুষের ভালোবাসা ও শ্রোদ্ধা।
বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী স্বভাবগত মেধাবী চাঁদপুরের লায়লা হারুন বাবার কর্মস্থান নরসিংদীতে জন্ম নিয়ে বরিশালে পড়াশুনা শুরু করে পটুয়াখালী হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠ-পর্ব শেষ করে কিছু দিন জার্মানিতে থেকে ফ্লোরিডার নাগরিক, এখন অবহেলিত মা ও শিশুদের অঘোষিত “মা”।
মানুষের সেবা করতেই মানুষের মাঝে বাসা বাধার মানসে ১৯৮৯ এ ডাক্তার “সুলতান সালাউদ্দিন আহমেদ” এর সাথে ফ্লোরিডায় প্রতিষ্ঠা করলেন “আওয়ামি-লীগ”-র স্টেট শাখা। মানব সেবার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে এখান থেকে শুরু করলেন পথচলা, হয়ে উঠলেন গণ-মানুষের নেত্রী।
ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী-লীগ এর প্রথম কমিটির কো-অর্ডিনেটর লায়লা হারুন এখান থেকেই একটু একটু করে হয়ে উঠলেন আর্তমানুষের অবলম্বন। ১৯৯৮ খ্রীষ্টাব্দে গঠন করেন “মা ও শিশু” নামের এক সেবামূলক প্লাটফর্ম। সেই থেকে রাজনীতির নেত্রী হয়ে উঠলেন সমাজ সেবক, নিজ কমিউনিটির বাইরেও প্রসারিত করেছেন তার সেবাকর্ম।
এতো বছর বিদেশে থাকলেও ভুলেননি নিজের দেশকে, ফ্লোরিডার সাথে সাথে চট্রগ্রামে দুইটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাণে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন প্রায় ৪০ (চল্লিশ) বছর ধরে। নিজ এলাকায় স্বাস্থ্য ক্যাম্প করে বিত্তহীন মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।
ফ্লোরিডা ও তার এলাকায় সেবার জাল বিছিয়েছেন তিনি, মানব সেবায় কোন বিরতি ও বিরক্তি নাই। যে উদ্দেশ্যে মানুষের জন্ম সে উদ্দেশ্য সফল ভাবে সমাধা করে মানুষ হওয়ার সার্থকতা অর্জন করেছেন লায়লা হারুন। সমস্যাক্রান্ত কেউ তার কাছ থেকে নিরাশ হয়ে ফেরে না। সবাই এখন জেনে গিয়েছে তার দরজায় কড়া নাড়লে সমাধান নিশ্চিত।
ফ্লোরিডায় অসহায় একা নারী আপনি? সহায়তা দরকার, কোন চিন্তা নাই, গিয়ে দাড়ান লায়লা হারুনের খিরকীর সামনে। তাকে বলুন আপনার কী দরকার, এই প্রকৃতির মত মায়ের কাছে তা পেয়ে যাবেন কোন প্রশ্ন ছাড়াই।
সরকারী কর্মকর্তা বাবার কর্মস্থানে ঘুরে ঘুরে সীমাহীন জীবনের অভিজ্ঞতার সাথে বহু বিদ্যালয়ের পুথিবদ্ধ শিক্ষার সাথে বাবার থেকে পাওয়া নৈতিক শিক্ষায় নিজেকে ঋদ্ধ করেন।
উচ্চ মেধাবী উচ্চ শিক্ষা শেষ করে সহপাঠী সরকার হারুনকে বিয়ে করেই ৪মাসের মাথায় বিশ্বের চূড়ায় পা রাখার প্রত্যয় নিয়ে ১৯৭৮ সালে পাড়ি জমান তখনকার পশ্চিম জার্মানী। উন্নত দেশে কাঙ্খিত জীবন-জাপনে অভ্যস্থ হতে হতেই দুই বছরের মধ্যে উপহার পেয়েছেন তাদের প্রথম কন্যা “উপহার হারুন”কে।
এর পরে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ফ্লোরিডায় এসে মানব সেবায় নিজেকে প্রস্তুত করতে না করতেই তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ১৯৮৭-এ তার কোল দখলে নিল শুভেচ্ছা হারুন। সেই থেকে উপহার আর শুভেচ্ছায় ভেসে ভেসে সকল দুঃখীর দুঃখ ভাসিয়ে দিলেন, আর এখনও ঠিক একই ভাবে ভাসিয়ে যাচ্ছেন।
এখানেই সীমাবদ্ধ থাকেননি লায়লা হারুন, এরই সাথে বহু সংগঠনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে তিনি যুক্ত। প্রায় ২ যুগ ধরে তার নের্তৃত্বে শহরে পহেলা বৈশাখের র্যালী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত ফোবানা সম্মেলন পরিচালিত হয়েছিলো তার নের্তৃত্বে। মূল কথা, তাকে বাদ দিয়ে এখানে কোন বড় প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হওয়ার উপায় নাই।
তিনি প্রতিষ্ঠাতা আওয়ামী-লীগ এর কো-কনভেনর। “নারী ফ্লোরিডা”-র উপদেষ্টা। বাংলাদেশ-আমেরিকান মাল্টিকালচার অরগানাইজেশনের উপদেষ্টা। সাহিত্য সন্মেলনের সচিব। ফ্লোরিডায় প্রথম থেকে বাংলাদেশ এসোসিয়েশান অব ফ্লোরিডায় সম্পৃক্ত থেকে বহু কাজের কাজী এর মধ্যে আবার ডাক্তার আব্দুস সাত্তার এর সাথে যুক্ত হয়ে শুরু করেছেন এশিয়া ফেয়ার ও সাংস্কৃতিক উৎসব। মানুষের সেবার সাথে বিনোদন কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান আয়োজন ও সমাজ সংস্কারেও নিবেদিত প্রাণ লায়লা হারুন।
তার জীবনের মূল ব্রত মানব কল্যাণ, তিনি স্বপ্ন দেখেন পৃথিবী হবে সকালের নির্মল স্নিগ্ধ বাতাসের মত।
২০০১ এ প্রতিষ্ঠিত হয় “বয়ন্টন বিচ” স্কুল, প্রথমেই দরকার তার লোগো। যথারীতি ডাক পরলো স্থানীয় বিশিষ্টজনদের, অগ্রগণ্য লায়লা হারুন উপেক্ষা করতে পারলেন না সে ডাক। সবাই তাদের লোগোর জন্য পছন্দের আইডিয়া প্লেস করলেন, সেখানে সবাইকে ছাপিয়ে লায়লা হারুনের প্রস্তাবিত “টাইগার” গৃহিত হলো। স্কুলের প্রধান ফটকে লায়লা হারুনের আর এক কৃতি হয়ে দাড়িয়ে আছে বাংলার টাইগার। যত দিন এই স্কুল টিকে থাকবে ততদিন এই শহরের মানুষ ভুলতে পারবে না তাকে।
এমন আরও বহু কৃতি গড়ে সবার মাঝে বেঁচে থাকুক লায়লা হারুন।।