জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনের লোগো তৈরি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রিতে কপি লোগো তৈরি বিনিময়ে ১১ লাখ টাকার কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।লোগো তৈরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. মহসিন। এই লোগোর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, গুগলে সার্চ দিলে এরকম লোগো পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিল পাওয়া যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তনের লোগোর সঙ্গে। এ ছাড়া চূড়ান্ত লোগো কোনটি সেটি নিয়েও তৈরি হয়েছে বির্তক।
সমাবর্তনের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে সমাবর্তনের লোগো দেখা যায় একটি অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে টাঙানো বিভিন্ন ব্যানারে সমাবর্তনের লোগো পরিলক্ষিত হয় আরেকটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সহকারী অধ্যাপক মহসিন সমাবর্তন কমিটিতে ছিলেন না। তিনি এই লোগোটি বিনা পারিশ্রমিকে তৈরি করার পর তাকে গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্যান্ডেল ও আসন ব্যবস্থাপনা উপকমিটির সভায় সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. মহসিনকে কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে সমাবর্তনের ইভেন্ট আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান পিআরও সরদার অ্যান্ড সন্সের কাছ থেকে ব্র্যান্ডিংয়ের কাজ করার জন্য ১১ লাখ টাকার চুক্তি করেছে সহকারী অধ্যাপক মহসিন। মূলত সমাবর্তনের লোগো ডিজাইন বিনামূল্যে করার পর তাকে এভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে উপকমিটির একজন বলেন, “সহকারী অধ্যাপক মহসিন সমাবর্তনের কোনো কমিটিতে ছিলেন না। এরপর তিনি ফ্রিতে এরকম নিম্ন মানের একটি লোগো তৈরি করার পর তাকে সমাবর্তন কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এরপর তিনি ব্রান্ডিংয়ের কাজটির জন্য ১১ লাখ টাকা চাইলে তাকে সেটিও দেওয়া হয়। এর জন্য তিনি কোনো ওয়ার্ক প্লান দেননি। তিনি কি করবেন সেটিও কেউ জানে না। আর এই কাজটি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় করা যায়। বাকি টাকাটা তার পকেটে চলে যাবে।”
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সমাবর্তনের লোগোর মতো এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ লোগো কপি করা হবে যা একেবারেই কাম্য নয়। নূন্যতম নিয়মনীতির ধারের কাছে না গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের চৌর্যবৃত্তির চর্চা খুবই দুঃখজনক। সমাবর্তন লোগো বানাতে কোনো প্রকার সৃজনশীলতা দেখায়নি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের আয়োজন করা কোনো অনুষ্ঠানে বা কোনো সংগঠনের লোগো, এই লোগোর চেয়ে বেশি সুন্দর এবং অর্থবহুল হয়।
এ ব্যাপারে কাজী মো. মহসিন বলেন, “লোগোটি কারো থেকে কপি করা নয়। এটা ইউনিক। সমাবর্তনের লোগোগুলো স্বাভাবিকভাবে এরকমই হয়। বই, কলম, মোমবাতি এ-সবই ব্যবহৃত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করে এরকম প্রতীক হচ্ছে শহীদ মিনার, লোগোতে শহীদ মিনার ব্যবহার করা হয়েছে।”
তবে এসব বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান তার ব্যক্তিগত সহকারী।