সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতির বিধান বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।
গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়।
আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, “কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।”
নানা মহলের সমালোচনার মধ্যে আইনের এ ধরা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাই কোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
প্রাথমিক শুনানির পর একই বছরের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে হাই কোর্ট। সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল করা হবে না এবং এ ধারা সংবিধানের ২৬(১) ও ২৬(২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারায় এমন বিধান রাখা হয়েছিল। পরে তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করলে আদালত ওই ধারাটি বাতিল করেছিলেন। যদিও সরকার এখনও তা আইন থেকে বাদ দেয়নি। তখন আদালত একে ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন।”