বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এখন আইসিইউতে চলে গেছে। সে কারণে তারা এখন উল্টাপাল্টা বলতে শুরু করেছে।
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বর্ণাঢ্য র্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এই সরকার এখন উল্টাপাল্টা বলতে গিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দিচ্ছে। অথচ এই ড. ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে সম্মান বয়ে নিয়ে এসেছেন, বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে উজ্জ্বল করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের প্রতিটি জায়গায় চোরে ভর্তি। সরকারের আশপাশের মন্ত্রী-এমপিরা এই চুরি-লুটপাটে জড়িত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার আজকে অন্তিম অবস্থায়। এই সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আর কিছু করার নেই। দেশে-বিদেশে ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে তারা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন পুষ্টিবিজ্ঞানী হয়েছেন। উনি বলেছেন, ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখতে, উনি কাঁচামরিচ শুকিয়ে ফ্রিজে রেখে পরে খেতে বলেছেন। উনি মাংসের বার্গার খেতে নিষেধ করেছেন। উনি বলেছেন, কাঁঠালের বার্গার খেতে। উনি আরও বলেছেন, বেগুনের বেগুনি খাবেন না, মিষ্টি কুমড়ার বেগুনি খাবেন। তাহলে সব পাস করা পুষ্টিবিজ্ঞানী এখন রিটায়ার্ডে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা এখন পুষ্টিবিজ্ঞানী হয়েছেন। কারণ, উনার কোনো বৈধতা নেই। তাই তিনি আবোল-তাবোল মেন্যু দিচ্ছেন খাওয়ার জন্য। সব শেষ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্রসফায়ারের মাধ্যমে জনির মতো আমাদের অনেক তরুণ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ব্যাংক লুট করেছে, রিজার্ভ চুরি করেছে- কোনোটাই বাদ রাখেনি। ছাত্রলীগ-যুবলীগ সব অপকর্মই করেছে। শুধু তাই না, মহিলা লীগের একজন নেত্রী মানিকগঞ্জে গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে।
রিজভী বলেন, ৪৫ বছর পার করেছে বিএনপি। সরকারের এত নির্যাতন, এত অত্যাচার সহ্য করেও এক দিনের ঘোষণায় আজকে এখানে যে জনতার ঢেউ নেমেছে এগুলো অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি দেখবেন? আজকে ছাত্রলীগের একটি সমাবেশ আছে সারা দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) লোক এনেছেন।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আমাদের হয়তো অনেক মূল্য দিতে হবে। এই মূল্য-ত্যাগ স্বীকার করেই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে, আন্দোলনকে সফল করতে হবে। এই প্রত্যয় নিয়েই আজকে আপনারা বাড়ি ফিরে যাবেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
পরে র্যালি শুরু হয়। র্যালিতে খোলা ট্রাকে করে বিএনপির আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহজাদা মিয়া, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, কায়সার কামাল, মীর সরফত আলী সপু, নাসির উদ্দিন অসীম, ডা. রফিকুল ইসলাম, রকিবুল ইসলাম বকুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।