রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশ ও জনগণের কল্যাণে এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিচারকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। শুক্রবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন কর্তৃক প্রদত্ত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া সংবিধানের আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সর্বক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ সর্বক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বিচারকরা বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করছেন। এ অবস্থায় আসতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের স্মৃতি রোমন্থন করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায়ই অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারকদের কার্যক্ষেত্রের সুবিধা, বেতন বৃদ্ধি, আবাসন এবং পরিবহন সুবিধার ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একক ভূমিকা ছিল।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানকে অনেক ম্যাচিউড উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে নজির নেই মাত্র ১১ মাসে এরকম একটি সুন্দর সংবিধান উপহার দিয়েছে যেখানে সমতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের কথা উল্লেখ রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর চিন্তা দর্শনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় সমতা ও গণতন্ত্র বিশ্বাস করতেন। তিনি সর্বক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন।
রাষ্ট্রপতি নাতিদীর্ঘ স্মৃতিচারণ মূলক বক্তৃতায় বিচারক জীবনের অনেক খুঁটিনাটি ঘটনা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় পদ্মা সেতু দুর্নীতি নিয়ে তাঁর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিচারকার্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অধিকতর যত্নশীল হওয়ার এবং ভবিষ্যতে দেশ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সজাগ ও সচেষ্ট থাকার জোর তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি ও অবসরপ্রাপ্ত দায়রা জজ তাঁর সুদীর্ঘ ২৩ বছরের বিচার বিভাগীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের কিছু স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা প্রত্যেক বিচারকের পবিত্র দায়িত্ব। দেশ আমাদেরকে অনেক দিয়েছে কিন্তু আমরা দেশকে কতটুকু দিলাম তার হিসাবও মেলাতে হবে।’
রাষ্ট্রপ্রধান বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিচারকদের আরো বেশি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া এবং মহাসচিব মো. মজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক ও পোট্রেট প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপতি সেখানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং নৈশভোজে অংশ নেন।