পাবনার সাঁথিয়ায় দেখা দিয়েছে লাম্পি স্কিন রোগ। উপজেলাব্যাপী এ রোগের প্রার্দুভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাম্পি স্কিন রোগে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরুর খামারীরা। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অর্ধ শতাধিক গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সাঁথিয়া উপজেলার আত্রাইশুকা গ্রামের কামারপাড়ার আব্দুস সাত্তার খানের দুটি ষাঁড় গরু সম্প্রতি লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গরুর মৃত্যুত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আব্দুস সাত্তার ও তার পরিবার। সাঁথিয়া পৌরসভার কালাইচাড়া গ্রামের এরশাদ আলী ও আ: করিমের গরু লাম্পি স্কিন রোগে মারা যায়। ওই এলাকায় খামারীদের গবাদী পশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। কলাইচড়া গ্রামের মাও: হাবিবুর রহমান সোমবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য গরু নিয়ে এসেছেন সাঁথিয়া পশু হাসপাতালে। সেখান নিয়ে আসা গরুটির শরীরে অসংখ্য গাল গাল লাম্পি স্কিন রোগের চিহ্ন দেখা গেছে। খামারী হাবিবুর রহমান জানান, তার এলাকায় লাম্পি স্কিন রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তার ২ টি গরু মারা গেছে। আমরা আতংকের মধ্যে রয়েছি। এছাড়া সম্প্রতি উপজেলার খানমামুদপুর গ্রামের আবু বককার প্রামাণিক একটি দুধেল গাভি ও একই গ্রামের ওসমান প্রামাণিকের একটি দুধেল গাভী এ রোগে মারা গেছে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের দিকে দেশে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। জুন-জুলাই মাসে সাধারণত লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এ রোগ দেখা দিলে পশুর শরীরে জ্বর আসে। এসময় আক্রান্ত পশুকে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবন করাতে হবে। লাম্পি স্কিন রোগে পশু আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে অন্য পশু থেকে আক্রান্ত পশুকে সরিয়ে রাখতে হবে।
এদিকে সরকারিভাবে এলএসডি রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদন না হওয়ায় তা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস খামারীদর মধ্যে সরবরাহ করতে পারছে না। এতে করে অসচেতন খামারীদের পশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন না পেয়ে খামারীরা বাজার থেকে বেশি মূল্যে (এলএসডি) ভ্যাকসিন ক্রয় করে গরুর শরীরে পুশ করছে। বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের মানিক মোল্লা ও হাসিনা খাতুন জানান, পাশের গ্রামে গরু মারা যাবার কারণে আমরা দু:শ্চিন্তায় রয়েছি। বাজার থেকে ২৫ শ’ টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন ক্রয় করে গরুর শরীরে দেয়া হয়েছে। একটি ভ্যাকসিন সর্বোচ্চ ১০টি গরুর শরীরে পুশ করা যায়।
সাঁথিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জহুরুল ইসলাম জানান,লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত পশুকে মশারী দ্বারা ঢেকে রাখতে হবে। তিনি আরও জানান, সরকারিভাবে এলএসডি রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাজ চলছে। ভ্যাকসিন উৎপাদন হলেই খামারীদের মাঝে তা সরবরাহ করা হবে। তবে পশুর শরীরে অপ্রয়জনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন তিনি।