পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কোনো ধরনের তাগিদে দেশের অমঙ্গল ডেকে আনবেন না। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। কোনো দুষ্টু লোকের বাংলাদেশের সরকারের প্রতি বিদ্বেষ থাকতে পারে। সরকারের প্রতি বিদ্বেষ থাকার কারণে তারা দেশ ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমি তাদের বলব, সাবধান। দেশ ধ্বংস করলে আপনারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর গতকাল রবিবার সংসদে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে বলব- কোনো প্রকার গুজবে কান দেবেন না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অবশ্যই করব। গত কয়েকটি নির্বাচনে তার প্রমাণ দিয়েছি। প্রত্যেকটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের শক্তি জনগণ। আমরা আশা করবো কুচক্রী মহল, যারা দেশে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আপনারা (জনগণ) রুখে দাঁড়াবেন। আপনারা বারবার প্রমাণ করেছেন, এই দেশ কোনো বিদেশি শক্তির কাছে পরাজিত হয়নি। এবারও সরকারের সঙ্গে এক হয়ে বিদেশিদের সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলব।
গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা ধরে রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিচ্ছে, যাতে করে কোনো ধরনের উন্মাদনা ও সন্ত্রাসী তৎপরতা এবং আর্থসামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণে রাষ্ট্রীয় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত না হয়। বিভিন্ন গোষ্ঠী দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে বহু উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যেসব দেশে স্থিতিশীলতা রয়েছে সেখানকার জনগণ সুখে আছেন। যেসব দেশে অস্থিতিশীলতা, সেখানকার মানুষ কষ্টে আছেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব-কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়- আমরা এই মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। এই নীতিতে আমরা প্রতিবেশি দেশগুলোসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় উনিয়ন (ইইউ) সহ সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারসাম্যমূলক কূটনীতি পরিচালনা করছি যা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।
দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকার গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও দক্ষ হতে হবে বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় প্রস্তাবিত প্রকল্পের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হয়। এতে করে প্রকল্পের ব্যয়ের পাশাপাশি সরকারের ব্যয়ও বাড়ে। তাই প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মাঝে শেষ করার জন্য আরও বেশি তদারকি প্রয়োজন। যেসব পিডি (প্রকল্প পরিচালক) সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে পারবেন না তাদের সাসপেন্ড করতে হবে, জেল দিতে হবে।
বাজেটে আয় ও করদাতা বাড়ানোর জন্য দুটি প্রস্তাব দিয়ে মোমেন বলেন, প্রথমটি হল- যেসব বাংলাদেশি নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে, তারা প্রত্যেকে যেন ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেন। দ্বিতীয়ত, যারা ২৫ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে লেনদেন করেন, তারা যেন ব্যাংক বা চেকের মাধ্যমে লেনদেন করেন। তাহলে সরকারের হিসাব থাকে।