মিয়ানমারের একটি স্কুলে সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। স্কুলটির একজন কর্মকর্তা এবং একজন ত্রাণকর্মীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনীর চালানো অভিযানে সাত শিক্ষার্থীসহ মোট ১৩ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহীদের ও তাদের সহযোগীদের ওপর সামরিক সরকারের আক্রমণে প্রায়ই বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার যখন ওই স্কুলে হামলা চালায়, সেসময় ক্লাস চলছিল। উপর থেকে স্কুলকে টার্গেট করে একনাগাড়ে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে। তখন থেকে এই সময়ের মধ্যে সাগাইং অঞ্চলের তাবায়িন এলাকায় হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালিয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিশুর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটল।
গত বছর সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর মিয়ানমারে ব্যাপক অহিংস বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। সামরিক বাহিনী এবং পুলিশ মারাত্মকভাবে বল প্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের উপর। ফলে দেশটির শহর ও গ্রামাঞ্চলে সশস্ত্র প্রতিরোধ ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে হামলা ও সেনাবাহিনীর তল্লাশি অভিযানের ছবি পোস্ট করেছেন অনেকেই। সেসব ছবিতে ওই স্কুলের বুলেটবিধ্বস্ত দেয়াল ও বিভিন্ন স্থানে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখা গেছে।
এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি (কিয়া) ও পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (পিডিএফ) ‘সন্ত্রাসীরা’ দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের লেত ইয়েত কোং গ্রামের ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ওই স্কুলে অভিযান চালানো হয়েছে।
সামরিক বাহিনীর আরো দাবি, স্কুলটিতে অভিযান চালানোর জন্য সামরিক বাহিনী সেখানে গেলে কিয়া ও পিডিএফের সন্ত্রাসীরা সেনা সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্যই সেনাবাহিনী গুলিবর্ষণ করতে বাধ্য হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।