দেশের ব্যাংকগুলো কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে খরচ কমিয়েছে। ২০২২ সালের শেষ ছয় মাসে এ খাতে ব্যয় হয়েছে ৫১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা এর আগের ছয় মাসের তুলনায় ১০১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা কম।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সিএসআর সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) সিএসআর খাতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছিল ৬১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এরপর জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ৫১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এ হিসাবে শেষ ছয় মাসে ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে ব্যয় কমেছে ১০১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সিএসআর খাতে ব্যাংকগুলোর ব্যয় বেড়েছে। কারণ ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসম্বরে এ খাতে ব্যয় ছিল ২৯৭ কোটি টাকা। ২০২২ সালে শেষ ছয় মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে দেশের ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে। খাতটিতে ব্যয়ের পরিমাণ ৩৫৩ কোটি দুই লাখ টাকা বা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৬৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতের আওতায় প্রধানত ২০২২ সালের প্রথমার্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এবং দেশের উত্তরাঞ্চলসহ অন্যান্য অঞ্চলে শীতার্ত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।
২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে স্বাস্থ্য খাতে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, মোট সিএসআর ব্যয়ের ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ এ খাতে ব্যয় করা হয়েছে।
এসময় ব্যাংকগুলো তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে শিক্ষা খাতে। এই খাতে ৬৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানকল্পে সিএসআর ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং শিক্ষা খাতের অবকাঠামো উন্নয়নেও সিএসআর ব্যয় করা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকে সিএসআর ব্যয় বেশি হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক মিলে চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। বেসরকারি সব ব্যাংক ৫৯৫ কোটি এক লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ৯৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ ব্যয় করেছে। আর বিদেশি ব্যাংকগুলো ১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের দুই দশমিক ৭০ শতাংশ ব্যয় করেছে।
তবে এই সময়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান সিএসআর খাতে কোনো টাকা ব্যয় করেনি।