অপ্রতিরোধ্য সিলেট স্ট্রাইকার্সের জয় অব্যাহত রয়েছে। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে সবার আগে কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে যাওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে মাশরাফির দল। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএল’র ১৩তম ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় পেয়েছে সিলেট।
এ দিন অল্প রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচটি নিজেদের পাল্লায় প্রায় টেনে নিয়ে যাচ্ছিল ঢাকা। কিন্তু শেষদিকে থিসারা পেরেরা ও আকবর আলীর ঝোড়ো ইনিংসে জয়ের স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে যায় তাদের। সৌম্য সরকারকে ছক্কা হাঁকিয়ে চার বল হাতে রেখে ম্যাচ শেষ করেন পেরেরা। ১১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। অপর প্রান্তে ৫ বলে ১ ছক্কায় ১০ রান করে অপরাজিত ছিলেন আকবর। তবে শুরুটা মন্দ হয়নি মাশরাফিদের। তবে মিডল অর্ডারদের ব্যর্থতায় ১২৯ রানের লক্ষ্য পেরোতে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয় মাশরাফি-মুশফিকদের।
এদিকে গতকালকের এই ম্যাচে ইনজুরির কারণে ছিলেন না ব্যাক টু ব্যাক তিন ম্যাচে ফিফটি করা তৌহিদ হৃদয়। আর তাতেই সিলেটের মিডল অর্ডার নড়বড়ে হয়ে পড়েছিলো। ওপেনিংয়ে ২০ বল খেলে মাত্র ১২ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অপর প্রান্তে অবশ্য রানের চাকা সচল রাখেন মোহাম্মদ হারিস। তবে শান্তুর মতো তাকেও সাজঘরে ফিরতে হয় নবম ওভারে। ৩২ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ রান করেন তিনি। ৬১ রানের ভেতর দুই ওপেনারকে বিদায় করে ঢাকাকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক নাসির হোসেন।
পরের ওভারের প্রথম বলে জাকির হাসানকে তুলে নেন আরাফাত সানি। এরপর ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে ধীরে সুস্থে এগোতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটে থিতু হতে সময় নিলেও ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি তারা। তাসকিন আহমেদের রিভার্স সুইং করা ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে সাজঘরে পথে হাঁটেন ২৫ বলে ২৭ রান করা মুশফিক। রান আউটের শিকার হন ইমাদ। তবে বাকি সময়টা সানন্দেই কাটিয়ে দেন আকবর ও পেরেরা।
এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। ব্যাট করতে নেমেই সিলেটের বোলিং তোপে দিশেহারা হয়ে পড়ে তারা। ইনিংসের তৃতীয় বলেই গোল্ডেন ডাক উপহার দেন নিজেকে হারিয়ে খোঁজা সৌম্য সরকার। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আসরে প্রথম বার খেলার সুযোগ পাওয়া রুবেল হোসেন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে দিলশান মুনাভীরা ও রবিন দাসকে একযোগে ফেরান পাকিস্তানি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। এই ধাক্কার পর রানের গতি বাড়েনি ঢাকার। থিতু হয়েও ২৮ বলে ২৭ রান করে নাজমুল অপুর বলে বোল্ড হন উসমান গণি। মোহাম্মদ মিঠুনও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইমাদের শিকার হওয়ার আগে ২৩ বলে ১৫ রান করেন মিঠুন। শেষদিকে নাসির হোসেন ও আরিফুল হকের ব্যাটে চড়ে কোনোমতে শতরান পার করে ঢাকা। ৩১ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩৯ রান করেন নাসির। ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২০ রান করে ফেরেন আরিফুল।
সিলেটের হয়ে ইমাদ সর্বোচ্চ ৩ টি উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন। এছাড়া রুবেল, নাজমুল ও মোহাম্মদ আমির নেন একটি করে উইকেট। পাঁচ ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে বিপিএলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল সিলেট। অন্যদিকে চার ম্যাচে ১ জয় ও ৩ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে ঢাকা।