সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক (২০২২-২৩) পদের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপি সমর্থিত ছয়জন আইনজীবী।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তারা। পরে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের জামিন দেন মহানগর দায়রা জজ মো: ইমরুল কায়েশ।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো: কামরুল ইসলাম সজল এ তথ্য জানিয়েছেন।
সজল বলেন, মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলাম। শুনানি শেষে আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী মো: কামরুল ইসলাম সজল, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমেদ, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার বিশেষ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, সহ-দফতর সম্পাদক মু: কাইয়ুম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাগর হোসেন ও সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য কামরুল ইসলাম।
এর আগে গত ৩০ মে তাদেরকে আগাম জামিন দেন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। চলতি বছরের গত ১৮ মে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়
বিএনপিপন্থী ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা হয়। শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: রবিউল হাসান এ মামলা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। গণনা করা হয় পরদিন ১৭ মার্চ। নির্বাচনে ভোট গণনায় বিএনপি সমর্থিত প্যানেল থেকে সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সম্পাদক দু’জন এবং চারজন সদস্যসহ মোট আটটি পদে এগিয়ে থাকে।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি, দুটি সহ-সভাপতি এবং তিনজন সদস্যসহ মোট ছয়টি পদে এগিয়ে থাকে। কিন্তু ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর আওয়ামীপন্থী সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল ভোট পুনর্গণনার জন্য একটি আবেদন দিয়ে এসে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ককে ভোট পুনরায় গণনা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। ফলে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক পদত্যাগ করেন। এজন্য দীর্ঘদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা হয়নি।
এরপর মেয়াদোত্তীর্ণ কার্যকরী (২০২১-২২) কমিটির আওয়ামীপন্থী সাতজন সদস্য গত ১২ এপ্রিল নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করেন। ওই সাব-কমিটি ২৭ এপ্রিল সমিতির কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করে পুনরায় ভোট গণনা করে আব্দুন নূর দুলালকে সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করে। অন্যদিকে সুপ্রিমকোর্ট বারে নির্বাচিত বিএনপি সমর্থিত সাত সদস্য এক সভায় আব্দুন নূর দুলালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে একটি রেজুলেশন করে।