দুর্দান্ত, অসাধারণ, অবিশ্বাস্য। এসব বিশেষণই যেন কম পড়ে যাবে সিকান্দার রাজার জন্য। ক্রিকেট দলীয় খেলা, তবে কোনো কোনো সময় আবার একজন খেলোয়াড়ই পুরো দলের সমার্থক হয়ে যান। ঠিক যেমনটা জিম্বাবুয়ের হয়ে করে যাচ্ছেন সিকান্দার রাজা।
এক আসর বাদ দিয়ে আবারও বিশ্বকাপে নাম লিখিয়েছে জিম্বাবুয়ে। প্রথম রাউন্ড পেরিয়ে এখন খেলছে সুপার টুয়েলভে। স্বপ্ন দেখছে সেমিফাইনাল খেলার। প্রথম রাউন্ডে দুই ম্যাচ জয়ের নায়ক রাজা। সুপার টুয়েলভে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের নায়কও রাজা। ২৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে এক উইকেটের জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। ব্যাট-বল দুটোতেই বসন্ত চলছে ৩৬ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডারের। তার চোখ এখন ব্রিসবেনে আগামীকাল বাংলাদেশ ম্যাচের দিকে।
গত জুলাই-আগস্ট ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজে হারায় জিম্বাবুয়ে। তখন থেকেই বদলে যাওয়ার শুরু। দুই সিরিজেই দলের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন রাজা। তাই রাজা কালও যে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন তা ভালোভাবেই জানা থাকার কথা বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় হারের ধাক্কা খেয়ে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই তলানিতে টাইগারদের।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ পয়েন্ট ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখতেও বাধা নেই জিম্বাবুয়ের। তবে রাজা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চান, ‘যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। এখনই বলা যাবে না, জিম্বাবুয়ে কোথায় থামবে! গ্রুপটি এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে। এটি খুব ভালো বিষয়। শুধু উন্মুক্ত হয়েছে বলব না, জিম্বাবুয়ের সামনে এখন ভালো কিছু অর্জনের দারুণ সুযোগ। আমি এখনই সেমি-ফাইনালের কথা বলব না। একটি একটি করে ম্যাচ ধরে এগোব। এখন বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে ভাবছি।’
সতীর্থদের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেই রাজা বলেন, ‘আমরা সর্বশক্তি ও মনোযোগ দিয়ে পাকিস্তান ম্যাচের কথা চিন্তা করছিলাম। এখন সেটি বাংলাদেশ ম্যাচের দিকে যাবে। আমরা প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ করে নামব। একটি একটি করে ম্যাচ ধরে এগোব। আমার এই ছেলেদের ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে।’
পাকিস্তান ম্যাচের আগে সকালে একটি ভিডিও দেখেছিলেন রাজা। যেখানে কিংবদন্তি অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিং তাকে নিয়ে বলেন, ‘ওর বয়স ৩৬, কিন্তু একজন তরুণের মতো স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করি ওর খেলায়। মনে হয় ওর বয়স ২৬। মাঠে দৌড়ে বেড়াচ্ছে, নিজেকে উপভোগ করছে এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
সেই ভিডিও দেখেই পাকিস্তানকে হারানো তাড়নাটা আরো বেড়ে যায় রাজার, ‘সকালে উঠার পরেই এক বন্ধু বার্তা পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করল আইসিসির ভিডিওটা দেখেছি কি না। সেখানে রিকি পন্টিং জিম্বাবুয়ে এবং আমাকে নিয়ে কথা বলেছে। আমার পরিবার এবং বন্ধুরাও অনেকে সেই বার্তা পাঠায়। সব দেখে চোখে জল এসে গিয়েছিল। নিজের ভেতরে একটা বাড়তি তাগিদ অনুভব করেছিলাম। ঐ ভিডিওটা-ই আমাকে চাঙ্গা করে দেয়। শান্ত ছিলাম, কিন্তু একই সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।’