হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক নরওয়ে প্রবাসীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে ওই প্রবাসীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে মারধরের পর বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করে তাকে জরিমানা করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা যায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে নরওয়ে প্রবাসী সাঈদ উদ্দিন বিমানবন্দরের ২ নম্বর ক্যানোপি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসেন। গেট সংলগ্ন ডান পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় এক এভসেক সদস্যের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে এই যাত্রী উত্তেজিত হয়ে ওই নিরাপত্তাকর্মীকে ধাক্কা দেন। এর পরপরই অন্যান্য এভসেক ও আনসার সদস্যরা সাঈদকে কনকর্স হলের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় সাত-আট জন মিলে তাকে বেদম মারপিট করে। এতে করে সাঈদের মাথা-মুখ ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে সাঈদ বেরিয়ে আসলে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এভসেক সদস্যরা তাকেসহ তার আত্মীয়স্বজন সবাইকে আবারও ভেতরে নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চেপে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মারপিটের শিকার যাত্রীর রক্তমাখা শরীর ও কিছু কথা কাটাকাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিও দেখার পর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
ভিডিওতে মারপিটের শিকার ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আপনারা পাঁচ-ছয় জন ধরে আমাকে মারছেন।” আর পাশে থাকা এভসেক সদস্য বলছেন, “আমাকে ধাক্কা দিলেন। আমি কি সাধারণ মানুষ? আমার ইউনিফর্ম আছে।” তবে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আহত ব্যক্তি বলছেন, “আমার কথা শোনেন ভাইয়া, আমি (ধাক্কা) দেইনি।”
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম লিখিত আকারে তার বক্তব্য পাঠান। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আহত যাত্রীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, “রাত সোয়া ৯টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমনী ক্যানোপি-২ এর সামনে দুজন যাত্রীর কর্তৃক বিমা প্রকাশ না করার শর্তে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, “একজন প্রবাসীর জন্য দেশে ফিরে বিমানবন্দরে মারপিটের শিকার হওয়ার চেয়ে লজ্জা ও অপমান আর কী হতে পারে! শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।”