এবারও ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠা হলো না পাকিস্তানের। পরশু কলম্বোতে ‘ফাইনাল নির্ধারণী’ ম্যাচটাতে শেষ মুহূর্তে আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় ধরতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ বলের নাটকীয় জয়ে ফাইনালে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের ২ উইকেটের হারের কারণ অনেকেই। টুর্নামেন্টের মূল আয়োজক হয়েও পরশু ‘অলিখিত সেমিফাইনাল’ ম্যাচটি পাকিস্তানকে খেলতে হয়েছে অ্যাওয়ে দল হিসেবে! পরে সহ-স্বাগতিক হওয়া শ্রীলঙ্কা পেয়েছে পুরো স্বাগতিক-সুবিধা, খেলেছে ঘরের মাঠের গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের উত্সাহ-অনুপ্রেরণা সঙ্গে নিয়ে।
এছাড়া চোটের কারণে পাকিস্তানকে ম্যাচটি খেলতে হয় সেরা ফরমে থাকা ৫ তারকাকে ছাড়াই। তাদের মধ্যে দুর্দান্ত ফরমে থাকা দুই পেসার হারিস রউফ ও নাসিম শাহের শূন্যতাই পাকিস্তানকে ভুগিয়েছে বেশি। বৃষ্টি-বাগড়ার ম্যাচে অধিনায়ক বাবর আজমের টস জিতেও প্রথমে ব্যাটিং নেওয়ার অবাক করা সিদ্ধান্তও আরেক কারণ। তবে মাঠের বাইরের এসব কারণের পরেও কিন্তু ম্যাচটা জিততে পারত পাকিস্তান। কিন্তু জিততে পারেনি। কেন? পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের দাবি, দুর্বল বোলিং এবং বাজে ফিল্ডিংই ডুবিয়েছে তাদের, ‘আমাদের বোলিং এবং ফিল্ডিং ভালো হয়নি। আমরা শুরুটা (বোলিংয়ে) ভালো করেছিলাম, শেষটাও ভালো করেছি। কিন্তু মিডল অর্ডারে উইকেট নিতে পারিনি। ওদের মাঝের জুটিটাই (কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামরাবিক্রমার) আমাদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে।’
বাবর আজমের বিশ্লেষণ ভুল নয়। ম্যাচে সত্যিই বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে বেশ কিছু অতিরিক্ত রান দিয়েছে পাকিস্তান, মিস করেছে রানআউটের সহজ সুযোগ। মিস করেছে ক্যাচও। তবে বাবর আজম জয়ী শ্রীলঙ্কাকে ঠিকই কৃতিত্ব দিয়েছেন, ‘শ্রীলঙ্কা সত্যিই ভালো ক্রিকেট খেলেছে। তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেই জিতেছে।’
ম্যাচ হারের কষ্ট তো আছেই। ঐ হার আরো একটি দুঃসংবাদ টেনে এনেছে পাকিস্তান শিবিরে। পরশুর হারে পাকিস্তান আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের তিনে নেমে গেছে। তাদের টপকে দুইয়ে উঠেছে ভারত। পাকিস্তান এশিয়াকাপটা শুরু করেছিল ১ নম্বরে থেকে। টুর্নামেন্টে নিজেদের ৫ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জিতেছে তারা, নেপাল ও বাংলাদেশের বিপক্ষে। হেরেছে দুটিতে, ভারত ও শ্রীলঙ্কার কাছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আরেকটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। টুর্নামেন্টের এই ব্যর্থতাই এক থেকে তিনে নামিয়েছে তাদের। প্রথমে পাকিস্তানকে টপকে ১ নম্বরে উঠে অস্ট্রেলিয়া। পরশুর হারে ভারতও টপকে গেছে তাদের।
পাকিস্তানের জন্য দুঃসংবাদ আছে আরো একটি। চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে পড়া দলের অন্যতম সেরা পেসার নাসিম শাহের বিশ্বকাপের শুরুর দিকে খেলা না-ও হতে পারে। অধিনায়ক বারব আজমই দিয়েছেন নাসিমকে নিয়ে এই অনিশ্চয়তার বার্তা, ‘সুস্থ হতে কত দিন লাগবে জানি না। তবে নাসিমকে বিশ্বকাপের শেষের দিকে পাওয়া যাবে।’