বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ভারতে বাংলাদেশি সিনেমার বাজার নেই বললেই চলে। তবে ধীরে ধীরে সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। কয়েক বছর আগে থেকেই বেশ কিছু ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশের সিনেমা হিন্দিতে ডাবিং করে প্রচার করা হয়েছে। চ্যানেলগুলোতে বাংলাদেশি সিনেমার মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ সে দেশের প্রফেশনাল চলচ্চিত্র আমদানিকারকদেরও বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে আগ্রহী করে তুলেছে।
২০২১ সাল থেকে বৈধভাবে বাংলাদেশি সিনেমার হিন্দি ডাবিং করে চালানো শুরু করেছে ভারতীয় পরিবেশকরা। গত দু-তিন বছরে বেশ কিছু সিনেমা ভারতে গিয়েছে। হিন্দিতে ডাব করে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ছবিগুলো মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশীয় সিনেমার নতুন বাজার তৈরি হয়েছে।
এদিকে মুম্বাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনফিক্সস প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের ছয়টি ছবির হিন্দি ডাবিং ডিজিটাল স্বত্ব কিনেছে। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি চলচ্চিত্র পরিচালক ফয়সাল আহমেদ জানান, ইতোমধ্যে ছয়টি ছবি নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু ছবি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ব্যবসা ভালো হলে বাংলাদেশ থেকে নিয়মিতই ছবি কিনবে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আরও জানান, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ছবি রপ্তানির এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হিন্দি ডাবিং স্বত্ব কেনা ছবিগুলো হলো ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘মিশন এক্সট্রিম ২’, ‘শান’, ‘তালাশ’ ও ‘লোকাল’।
ফয়সাল আহমেদ আরও বলেন, ‘বাংলা সিনেমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি হলো। এতে প্রযোজকের বাড়তি আয়ও হবে। তারা ছবিগুলোর মূল্যও ভালো দিচ্ছে। এমনও দেখলাম, হল থেকে কয়েকটি ছবির যে টাকা এসেছে, এখান থেকে তার চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছে ছবিগুলো।’
ফয়সাল জানান, ভারতের ‘আলট্রা ইন্ডিয়া’ নামে একটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে গত মার্চে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ হিন্দি ডাবিংয়ে মুক্তি পেয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ মিলিয়ন দর্শক দেখেছে ছবিটি। বাকি ছবিগুলো ডাব করে মুক্তির প্রস্তুতি চলছে। শুধু আলট্রা ইন্ডিয়ায় নয়, অ্যামাজন প্রাইমেও বাংলাদেশের সিনেমা একই সঙ্গে বাংলা ও হিন্দি ডাবিংয়ে মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে হিন্দি ডাবিং স্বত্ব বিক্রি হওয়া ‘তালাশ’ ও ‘লোকাল’ ছবি দুটির প্রযোজক ও নায়ক আদর আজাদ বলেন, ‘এটি আমাদের সিনেমার জন্য বাড়তি একটা আয়। এভাবে আমাদের ছবির হিন্দি ডাবিং স্বত্ব যদি তারা নিয়মিত কিনতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশি সিনেমার নতুন একটি আয়ের পথ তৈরি হবে।’