মুরুব্বিরা সবকিছু থেকে শিখতে বলেছেন৷ বলেছেন, দুনিয়া জুড়ে পাঠশালা৷ আজ একটি বড় পাঠদান কর্মসূচি হয়ে গেল গাইবান্ধায়৷ দেখা যাক, নির্বাচন কমিশন কী জানলো আর আমরাই বা কী শিখলাম?
আজ বুধবার ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে এ ঘোষণা দেওয়ার সময় তিনি জেনেছেন যে, ভোট গ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। স্মরণকালে সম্ভবত এবারই প্রথম একটা গোটা আসনে ভোট গ্রহণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, এর আগে সবসময় ভোট গ্রহণ কমিশনের নিয়ন্ত্রণেই ছিল৷ তা আমরা শিখলাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন, মানে এই ক্ষমতা তার আছে!
অবশ্য আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে, কেন এই সীমানার বাইরে চলে যাওয়া সংক্রান্ত পঞ্চ-ক কে, কারা, কোথায়, কেন, কীভাবে এটা করতে পারলো বা পারলেন৷ নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কমিশন। বিজ্ঞ সিইসি জানালেন, ”কোনো একটি পক্ষ বা কোনো একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রভাবিত করতে পারছেন। ফলে, আমাদের দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, ভোট গ্রহণ নিরপেক্ষ হচ্ছে না।”
‘কোনো একটি পক্ষ’ বা ‘কোনো একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী’ কে আপনার কোনো আইডিয়া আছে মাননীয়? আপনার সিসি ক্যামেরার রেজ্যুলিউশন কেমন? আপনি বলছিলেন, একই ধরনের প্রতীক দেওয়া গেঞ্জি পরে অনেককে ভোট দিতে দেখেছেন৷ তারা কারা আপনি কী জানেন? আপনাকে একটা ক্লু দেই, উপকারে আসে কিনা দেখেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে চারজন প্রার্থী একযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোট বর্জন করা প্রার্থীরা হলেন—জাতীয় পার্টি সমর্থিত এ এইচ এম গোলাম শহীদ, বিকল্পধারার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাহিদুজ্জামান ও মাহবুবুর রহমান। এই উপনির্বাচনে মোট পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে এখনো মাঠে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান।
নির্বাচনে যারা অনিয়ম করছেন, সে জন্য কী অ্যাকশন নেওয়া হবে, সংবাদ মাধ্যমে আমাদের প্রশ্নের উত্তরে সিইসি জানিয়েছেন তারা প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রাথমিক পদক্ষেপের পাশাপাশি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পদক্ষেপ কখন নেবেন জনাব আউয়াল?
আপনার প্রিয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রধান এই কার্যক্রমে যথার্থ ভূমিকা রেখেছে৷ তাদের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? নাকি এই বিষয়েও শেরে বাংলা নগরের সবচেয়ে বিখ্যাত বাসিন্দা কী বলেন তার জন্য অপেক্ষা করছেন আপনি? কিছু জানলে জানাবেন, কেমন?
আমরা সবাই মিলে ঐকিক নিয়মের একটি অংক করবো কিনা? একটি আসনে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বুঝতে সাড়ে ছয় ঘণ্টা লাগলে ৩০০ আসনের বিষয় বুঝতে কতক্ষণ লাগবে? অবশ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে নির্বাচন বন্ধ করা হলেও পরের উত্তরাধিকার না আসা পর্যন্ত সরকার আগের অবস্থাতেই থাকবে এরকমই বোধহয় নিয়ম, তাই না?
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত এ এইচ এম গোলাম শহীদসহ উপনির্বাচনে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ইভিএমের মাধ্যমে ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোট গ্রহণ করার কথা ছিল।