যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।বুধবার (৩ আগস্ট) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল।মামলার তদন্ত সংস্থা দুদক আজ প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা নতুন এ দিন ধার্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় গত ৩১ মার্চ এস কে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দায়ের করেন সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।মামলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়,২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলারে (ওই সময় ৮৬ টাকা ডলার হিসেবে বাংলাদেশী টাকায় ২ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার) এস কে সিনহার জন্য তিনতলা একটি বাড়ি ক্রয় করেন তার ভাই অনন্ত কুমার। বাড়িটি কেনার আগে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে অনন্ত সিনহা নিজের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরো একটি বাড়ি কিনেছিলেন।পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথমে বাড়িটি ৩০ বছরের কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য বাড়ি কেনেন নগদ টাকায়।
২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনন্ত কুমার সিনহার নিউ জার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি হিসাবে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়।ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়।এস কে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থপাচারে বৈধ কোনো উৎসের সন্ধান পায়নি সংস্থাটি।দুদক সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছে,এস কে সিনহা বিভিন্ন সময়ে ঘুষ হিসেবে যেসব টাকা গ্রহণ করেছেন তা বিদেশে পাচার করেন।দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ এনেছে।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।এস কে সিনহা তার নিজ নামে রাজউকের উত্তরা প্রকল্পে একটি প্লট বরাদ্দ পান।পরবর্তীকালে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে তার আরেক ভাই নরেন্দ্রকুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার আরো একটি প্লটের জন্য আবেদন করেন।