শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২০ লাখ টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ।
শনিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম উদ্দীন। তিনি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত মামলা রুজু হয়নি। তবে জেলা প্রশাসন একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। সরকারি কর্মচারী বিধি মতে সেটি সাধারণ ডায়রি হিসেবে নথিভুক্ত করেছে পুলিশ।
ওসি (তদন্ত) বলেন, সরকারি কর্মচারি বিধি মতে জেলা প্রশাসনের অভিযোগটি গ্রহণ করে তা সাধারণ ডায়রি হিসেবে নথিভুক্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। নিয়ম মতে, দুদকই সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের ঘটনায় মামলা দায়ের করবেন।
অন্যদিকে আতিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে জেলা প্রশাসন। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আল আমিন পারভেজ এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, থানায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে তা শুরু হয়েছে। তিনি কিভাবে, কোথা থেকে এতো টাকা পেলো এবং তা ঢাকায় কেন নিয়ে গেছে- সব বিষয়ে উৎঘাটন করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শুক্রবার ১ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাগ ভর্তি ২৩ লাখ ঘুষের টাকা নিয়ে ঢাকা শাহজালাল (র:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান ধরা পড়েন। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকেই তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। শুক্রবার রাতে তাকে কক্সবাজার মডেল থানায় সোপর্দ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আতিকুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। তার ব্যাগ স্ক্যান করলে ব্যাগের ভেতর বিপুল পরিমাণ টাকা দেখা যায়। সকাল পৌনে ১০টার ইউএস বাংলার ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ঘণ্টাখানেক পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তল্লাশিতে তার ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে আতিকুর রহমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেল সাড়ে চারটার একটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। বিমানবন্দর থেকে আতিকুর রহমানকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায় বলে জানা গেছে। তিনিসহ ৩ জন সার্ভেয়ার মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ আতিকুর রহমান ওই অর্থ নিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টজনেরা। কক্সবাজারে সরকারের ৩ লাখ কোটি টাকার ৭২টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রচুর পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে।