একটা মাসকে শেষ হতে দিচ্ছি না বা দিবো না বিদ্রোহ-বিপ্লবের জায়গা থেকে দুর্দান্ত চিন্তা। ক্রমটা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের এই ৩৬ জুলাই কাউন্টিং’এ ছিলো আমার সবথেকে বড় মুগ্ধতা। খুব স্বতন্ত্রও বিষয়টা।
কিন্তু দ্বিধা আমার অন্যত্র। বাংলা ভাষা খুবই সমৃদ্ধ ভাষা। অভিজাতও! তো এই সমৃদ্ধ ভাষাকে কোন দৈন্যতায় একটা স্বাধীন করা দেশের শাব্দিক শক্তির আঁচলে রাখতে হবে? অর্থাৎ একই শব্দের পুনরাবৃত্তিতে, স্বাচ্ছন্দ্যবোধে বাঁধা আসছে, মন ক্যামনের বোধ থেকে। ‘দ্বিতীয় স্বাধীন’ শ্রুতিমধুর না, ভিন্ন আঙ্গিকে মনমধুরও না। মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে, গণতন্ত্র রক্ষার্থে গণতান্ত্রিক অধিকার গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবার আগে, প্রতিষ্ঠিত হবার আগের বিষয়- দেশটা স্বাধীন কিনা।
ঠিক যেমন প্রেম এবং ভালোবাসা এক বিষয় নয়। প্রেম ভালোবাসার চূড়ান্ত এক চূড়া কিন্তু একমাত্র নয়। প্রেম ভালোবাসার একটি শাখা মাত্র, এবং তারই অন্তর্ভুক্ত। প্রেমে ভালোবাসা অনিবার্য, কিন্তু ভালোবাসায় প্রেম তেমনটা নয়। ভালোবাসা আরো বেশি কিছু, ভালোবাসা আরো বিস্তৃত কিছু। প্রেম নির্দিষ্ট মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ; ভালোবাসা সেখানটাতে অসীম ক্ষেত্র।
গণ-অভ্যুত্থান, অধিকার আদায়ে বিপ্লবাত্মক অংশগ্রহণ প্রেমের মতন। অপরদিকে স্বাধীন দেশ অসীম, ভালোবাসার মতন। যাবতীয় আন্দোলন, সংস্কারের আবেদন, এবং সরকার পরিবর্তনের বিপ্লব তারই অধীন।
গণঅভ্যুত্থান, গণজাগরণ, পরিচালিত হবার আগে, প্রতিষ্ঠিত হবার আগের বিষয়- বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। এখন বলতে পারার স্বাধীনতা, কোন কিছু দাবি করার স্বাধীনতা, বা Freedom of speech বিষয়টার সাথে শুধুই Freedom এর তফাৎ থাকবে না?
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে একাত্তরে এবং তাও অনেক ত্যাগেই অপর দেশের কাছ থেকে। চব্বিশের এই অভূতপূর্ব নয় তবে অপূর্ব ছাত্র-আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান এই নামকরণে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসবে না তারা? আপন ঘরের বিবাদ, আপন ঘরের মনোমালিন্য দিয়ে মুখ উজ্জ্বল করছি না, পর দেশের প্রমাণিত শত্রুদের? এই সুযোগটা কেন দিব তাদের আমরা? আমাদের তো নেই শব্দের দৈন্যতা! বায়ান্নতেই তার মীমাংশা করেছিলাম আমরা॥
তাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনই এই আন্দোলনের সবথেকে সুন্দর নাম। গণঅভ্যুত্থানের এই গগনে আন্দোলিত হবার পরিভাষা আছে। পরবর্তীতে সময় যাকে সামনে এসে দাঁড় করিয়েছে নয় দফা থেকে একদফায়। সেই ক্ষেত্রে পরিবর্তিত নাম হতে পারে- ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান বা অসহযোগ আন্দোলন বা একদফা আন্দোলন কিংবা কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন। যা কবল থেকে মুক্তি পাবার মতাদর্শ। কর্তৃপক্ষের অন্ধ আনুগত্যকে আঘাত করার পক্রিয়া। স্বেচ্ছাচারীতাতে সোচ্চার হবার ডাক কিংবা সময় এবং পরিস্থিতির প্রয়োজনে যা হয়ে উঠে বিরোধী দল বা বিকল্প কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠী সৃষ্টির দাবি। অর্থাৎ এটা একটা স্বাধীন হওয়া দেশের নাগরিক স্বাধীনতাকে সীমিত করার প্রতিবাদ, বিদ্রোহ, অনিবার্য বিপ্লব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত বিজয়। যে কোন খেলায় জয়ের বিষয় থাকলে সেখানে বিজয় এবং পরাজয় থাকবেই। বাক্যটি- স্বাধীন করেছি নয়।
ইতিহাসে প্রথম ছাত্র আন্দোলন হয় চিনে। যুগে যুগে এমন আন্দোলন অনেক দেশেই হয়েছে এবং যুগে যুগেই তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গণমানুষ, সাধারণ মানুষ, ঘরের মানুষ। এবং নিদারুনভাবে যুক্ত হয়েছে মৃত্যু। মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান লেখা আছে অশ্রুজলে…
তাই- স্বকীয় নামেই বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ভুবন ভোলানো! বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে তা অনন্য। তেমনই- স্বকীয় নামেই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান দুর্দান্ত। এই আন্দোলনে ছাত্রদের মুখ্য ভূমিকা স্বাধীনতার সংগ্রামের পথপ্রদর্শক হিসেবে অগ্রগন্য। তেমনই- স্বকীয় নামেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নেয়া শ্রেষ্ঠ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বিদ্রোহে, পাক হানাদারদের প্রতিহত করে একটা দেশ স্বাধীন করা যুগযুগান্তরের ঐশ্বর্য। এবং এটাই স্বাধীনতা আন্দোলন। তেমনই- স্বকীয় নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন। আঠারোর প্রথম কোঠা সংস্কার আন্দোলন এবং আঠারোর সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন- এই সকল স্বনামেই কার্যকর এবং সুন্দর। যেমন কার্যকর উনানব্বইতে হওয়া চেকোস্লোভাকিয়ার ভেলভেট বিপ্লব!
কথা আমার এটাই; সকল দ্রোহ বিদ্রোহ প্রেম পরিণতি স্বশক্তিতেই সমুজ্জ্বল। স্বনামেই সুন্দর। এই যেমন, স্নিগ্ধকে এখন যদি আমরা মুগ্ধ ডাকা শুরু করি- স্নিগ্ধ কি আর মুগ্ধ হবে?
একটা মাসকে শেষ হতে দিচ্ছি না বা দিবো না বিদ্রোহ-বিপ্লবের জায়গা থেকে দুর্দান্ত চিন্তা। ক্রমটা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ২৪ এর ছাত্র আন্দোলনের এই ৩৬ জুলাই কাউন্টিং’এ ছিলো আমার সবথেকে বড় মুগ্ধতা। খুব স্বতন্ত্রও বিষয়টা।
কিন্তু দ্বিধা আমার অন্যত্র। বাংলা ভাষা খুবই সমৃদ্ধ ভাষা। অভিজাতও! তো এই সমৃদ্ধ ভাষাকে কোন দৈন্যতায় একটা স্বাধীন করা দেশের শাব্দিক শক্তির আঁচলে রাখতে হবে? অর্থাৎ একই শব্দের পুনরাবৃত্তিতে, স্বাচ্ছন্দ্যবোধে বাঁধা আসছে, মন ক্যামনের বোধ থেকে। ‘দ্বিতীয় স্বাধীন’ শ্রুতিমধুর না, ভিন্ন আঙ্গিকে মনমধুরও না। মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে, গণতন্ত্র রক্ষার্থে গণতান্ত্রিক অধিকার গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবার আগে, প্রতিষ্ঠিত হবার আগের বিষয়- দেশটা স্বাধীন কিনা।
ঠিক যেমন প্রেম এবং ভালোবাসা এক বিষয় নয়। প্রেম ভালোবাসার চূড়ান্ত এক চূড়া কিন্তু একমাত্র নয়। প্রেম ভালোবাসার একটি শাখা মাত্র, এবং তারই অন্তর্ভুক্ত। প্রেমে ভালোবাসা অনিবার্য, কিন্তু ভালোবাসায় প্রেম তেমনটা নয়। ভালোবাসা আরো বেশি কিছু, ভালোবাসা আরো বিস্তৃত কিছু। প্রেম নির্দিষ্ট মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ; ভালোবাসা সেখানটাতে অসীম ক্ষেত্র।
গণ-অভ্যুত্থান, অধিকার আদায়ে বিপ্লবাত্মক অংশগ্রহণ প্রেমের মতন। অপরদিকে স্বাধীন দেশ অসীম, ভালোবাসার মতন। যাবতীয় আন্দোলন, সংস্কারের আবেদন, এবং সরকার পরিবর্তনের বিপ্লব তারই অধীন।
গণঅভ্যুত্থান, গণজাগরণ, পরিচালিত হবার আগে, প্রতিষ্ঠিত হবার আগের বিষয়- বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। এখন বলতে পারার স্বাধীনতা, কোন কিছু দাবি করার স্বাধীনতা, বা Freedom of speech বিষয়টার সাথে শুধুই Freedom এর তফাৎ থাকবে না?
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে একাত্তরে এবং তাও অনেক ত্যাগেই অপর দেশের কাছ থেকে। চব্বিশের এই অভূতপূর্ব নয় তবে অপূর্ব ছাত্র-আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান এই নামকরণে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসবে না তারা? আপন ঘরের বিবাদ, আপন ঘরের মনোমালিন্য দিয়ে মুখ উজ্জ্বল করছি না, পর দেশের প্রমাণিত শত্রুদের? এই সুযোগটা কেন দিব তাদের আমরা? আমাদের তো নেই শব্দের দৈন্যতা! বায়ান্নতেই তার মীমাংশা করেছিলাম আমরা॥
তাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনই এই আন্দোলনের সবথেকে সুন্দর নাম। গণঅভ্যুত্থানের এই গগনে আন্দোলিত হবার পরিভাষা আছে। পরবর্তীতে সময় যাকে সামনে এসে দাঁড় করিয়েছে নয় দফা থেকে একদফায়। সেই ক্ষেত্রে পরিবর্তিত নাম হতে পারে- ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান বা অসহযোগ আন্দোলন বা একদফা আন্দোলন কিংবা কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন। যা কবল থেকে মুক্তি পাবার মতাদর্শ। কর্তৃপক্ষের অন্ধ আনুগত্যকে আঘাত করার পক্রিয়া। স্বেচ্ছাচারীতাতে সোচ্চার হবার ডাক কিংবা সময় এবং পরিস্থিতির প্রয়োজনে যা হয়ে উঠে বিরোধী দল বা বিকল্প কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠী সৃষ্টির দাবি। অর্থাৎ এটা একটা স্বাধীন হওয়া দেশের নাগরিক স্বাধীনতাকে সীমিত করার প্রতিবাদ, বিদ্রোহ, অনিবার্য বিপ্লব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত বিজয়। যে কোন খেলায় জয়ের বিষয় থাকলে সেখানে বিজয় এবং পরাজয় থাকবেই। বাক্যটি- স্বাধীন করেছি নয়।
ইতিহাসে প্রথম ছাত্র আন্দোলন হয় চিনে। যুগে যুগে এমন আন্দোলন অনেক দেশেই হয়েছে এবং যুগে যুগেই তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গণমানুষ, সাধারণ মানুষ, ঘরের মানুষ। এবং নিদারুনভাবে যুক্ত হয়েছে মৃত্যু। মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান লেখা আছে অশ্রুজলে…
তাই- স্বকীয় নামেই বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ভুবন ভোলানো! বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে তা অনন্য। তেমনই- স্বকীয় নামেই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান দুর্দান্ত। এই আন্দোলনে ছাত্রদের মুখ্য ভূমিকা স্বাধীনতার সংগ্রামের পথপ্রদর্শক হিসেবে অগ্রগন্য। তেমনই- স্বকীয় নামেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নেয়া শ্রেষ্ঠ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বিদ্রোহে, পাক হানাদারদের প্রতিহত করে একটা দেশ স্বাধীন করা যুগযুগান্তরের ঐশ্বর্য। এবং এটাই স্বাধীনতা আন্দোলন। তেমনই- স্বকীয় নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন। আঠারোর প্রথম কোঠা সংস্কার আন্দোলন এবং আঠারোর সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন- এই সকল স্বনামেই কার্যকর এবং সুন্দর। যেমন কার্যকর উনানব্বইতে হওয়া চেকোস্লোভাকিয়ার ভেলভেট বিপ্লব!
কথা আমার এটাই; সকল দ্রোহ বিদ্রোহ প্রেম পরিণতি স্বশক্তিতেই সমুজ্জ্বল। স্বনামেই সুন্দর। এই যেমন, স্নিগ্ধকে এখন যদি আমরা মুগ্ধ ডাকা শুরু করি- স্নিগ্ধ কি আর মুগ্ধ হবে?