দেশে সারের কোনো সংকট হবে না জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে ভর্তুকি আরো বাড়বে। তবে এই মুহূর্তে সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তাতে আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত কোনো সমস্যা হবে না।
আজ বুধবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার আমদানি করা যাচ্ছে না। তবে সরকারের ত্বরিত পদক্ষেপে বিকল্প উৎস কানাডা থেকে সার আনা সম্ভব হচ্ছে। টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সারের যে মজুদ রয়েছে তা আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত চলবে।
যমুনা ও চট্টগ্রাম সার কারখানা দুটিতে গ্যাস সংকটের কারণে সার উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউরিয়া সার নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কারখানা দুটি চালু করার জন্য সরকার চেষ্টা করছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে ইউরিয়া সার আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে এবং সারে ভর্তুকির পরিমাণ আরো বাড়বে। এ ছাড়া গ্যাস সংকটের কারণে সার কারখানা বন্ধ হলে, খাদ্য উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে।
রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকে মন্ত্রী কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কামনা করেন। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ সার আমদানি করতে পারছে না এবং এর ফলে সরকারকে সারে অতিরিক্ত দুই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বলে রাষ্ট্রদূতকে জানান মন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড সুইজারল্যান্ডের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে আনার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে কৃষিমন্ত্রীর সাথে এসওয়াটিনির (সাবেক সোয়াজিল্যান্ড) বাণিজ্য, শিল্প ও ট্রেড মন্ত্রী মানকুবা খুমালোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। এসওয়াটিনির মন্ত্রী বাংলাদেশকে কৃষিকাজে জমি লিজ দেওয়ার এবং কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করার প্রস্তাব দেন এবং কৃষি খাতে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
এদিকে সকালে ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে কনসাল্টেটিভ গ্রুপ ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চের (সিজিআইএআর) গবেষণা কার্যক্রমের পরিচিতি ও বাংলাদেশের সাথে অংশীদারত্ব’ নিয়ে সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কর্তৃক সার ও বীজসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণে বিশাল ভর্তুকি, কৃষিযন্ত্রে ভর্তুকি, গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ ছাড়াও বন্যা ও খরাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কর্মসূচিসহ বহুমুখী উদ্যোগের ফলেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। বিগত ৫০ বছরে চালের উৎপাদন প্রায় চার গুণ বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।