তিন দিন আগেও বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন বলেছিলেন তিনি নাকি শত সমস্যায় রাতে ঘুমাতে পারেন। বিছানায় যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে চোখে ঘুম এসে যায়। দুই দিন আগে ফিফা থেকে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। সোহাগকে দুই বছর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
শনিবার রাতে ৫২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন পড়েছেন সালাহউদ্দিন। পড়ে বুঝার চেষ্টা করেছেন কোথায় কি হয়েছে। প্রতিবেদন পড়ে সারা রাত ঘুম হয়নি। জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন,‘কিসের ঘুম। কোথায় ঘুম।’
সালাহউদ্দিনের টেবিলে ৫২ পৃষ্ঠার রিপোর্ট। সেই রিপোর্ট হাতে নিয়ে গতকাল বাফুফে গিয়ে সবাইকে ডেকে লাইন টু লাইন ধরে ধরে প্রশ্ন করেন। কারো মুখে জবাব ছিল না। হিসাব বিভাগকে প্রশ্ন করলে তারা আমতা-নামতা করছিল। কারো মুখে কথা নেই।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি দুই ঘন্টা বসেছি। তাতেই বুঝতে পারছি। কিভাবে কি হয়েছে, রাতে বাসায় বসে যখন এই রিপোর্ট পড়েছি তখন বুঝলাম এরা কি করেছে। বুঝতে পারছি কে কি করেছে। কোথায় কি হয়েছে, তা নিয়ে আমি পরিষ্কার। এটা শুধুই গাফিলতি করা হয়েছে। এখানে অদক্ষতার কাজ করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা ছিল, অলসতা ছিল।’ তিনি বলেন,‘আমি বললাম। আমাকে বুঝান (হিসাব বিভাগকে)। সালাম ফাইনাল অথরিটি। আপনার কাছ থেকে ফাইনাল পেপারস অনুমোদনের জন্য সালামের কাছে গেল কিভাবে। সব কাগজ-পত্র দেখার দায়িত্ব আপনার। তখন উ আঁ করছে।
বাফুফের সভাপতি হিসাব অর্থ কমিটি নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা না তিনি সালাম মুর্শেদীকে চেয়ারম্যান করে কমিটি দিয়েছেন। সালাম সব খবর রাখবেন। তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন সালাহউদ্দিন। কিন্তু সালামের হিসাব বিভাগই আজ বাফুফের ভাগ্যে এই পরিণতি ডেকে এনেছে। সালাহউদ্দিন বাফুফের হিসাব বিভাগের সংশ্লিষ্টদের তার রুমে নিয়ে হিসাব বুঝাতে বলেছেন। তাতে বেরিয়ে এসেছে তার না জানা অনেক তথ্য। একটা ফেডারেশনের হিসাব বিভাগ এভাবে চলতে পারে না। সালাহউদ্দিন বললেন, ‘সালাম, সোহাগ সাক্ষর করার পর আমি চেকের পাতায় সাইন করি। সাইন করার আগে প্রত্যেকটা বিষয় খতিয়ে দেখার দায়িত্ব অর্থ কমিটির। আমার পক্ষে তো এতো হিসাব দেখা সম্ভব না। হিসাব বিভাগের লোকজনের কথা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এদের সবাইকে বরখাস্ত করা উচিত।
সালাহউদ্দিন যখন হিসাব বিভাগ নিয়ে বসেছিলেন তখন তার সামনে বাফুফের আরেক সহ সভাপতি আতাউর রহমান মানিক। তিনি নিজেও হিসাব বিভাগের লোকজনদের বলেছেন আপনারা রিজাইন দিন।
সালাহউদ্দিন বলছিলেন তিনি যখন তার হিসাব বিভাগে নানা প্রশ্ন করলেন তখন তারা সঠিক জবাব দিতে পারছিলেন না। আমি টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করব নাকি এসব নিয়ে কথা বলব।