স্বল্পোন্নত দেশের কাতার (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ আগামী ২০২৬ সালে কার্যকর হবে। এরপরও ২০৩৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের ইকোনোমিক অ্যান্ড সোসাল কাউন্সিলের পর্যবেক্ষণে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন পরিস্থিতি। এ সময় উত্তরণ পরবর্তী পরিস্থিতি সংক্রান্ত নিয়মিত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
এলডিসি থেকে টেকসই উত্তরণে গণমাধ্যমের কার্যকর সম্পৃক্ততা বিষয়ক কর্মশালায় গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। রাজধানীর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করে ইআরডির সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রজেক্ট (এসএসজিপি)।
ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। কিছু সম্ভাবনাও তৈরি হবে। চ্যালেঞ্জের একটি হচ্ছে এখনকার মতো শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা আর থাকবে না। অবশ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাজ্য অতিরিক্ত তিন বছর এ সুবিধা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। অষ্ট্রেলিয়াও একই ঘোষণা দিয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে বাকি দেশগুলোতেও যাতে দীর্ঘ মেয়াদে এ সুবিধা বলবৎ থাকে। এজন্য ইআরডিসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের পরিবর্তিত বাণিজ্য পরিস্থিতি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জন করলে পণ্য বা সেবার প্রকৃত দাম আদায়ে দরকষাকষির অবস্থায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
এসএসজিপির কম্পোনেন্ট ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, ২০২৬ সালে উত্তরণের পরও আরও প্রায় ৯ বছর বাংলাদেশেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। উত্তরণ কতটা টেকসই হচ্ছে তা নজরে রাখা হবে। এ সময় বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সূচকের অবস্থা জানিয়ে অন্তত চারটি প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রথম প্রতিবেদন দুটি দিতে হবে দুই বছর পর পর। অর্থাৎ প্রথমটি ২০২৭ সালে, আর দ্বিতীয়টি ২০২৯ সালে। পরবর্তী প্রতিবেদন দু’টি দিতে হবে তিন বছর পর পর। সে হিসেবে ২০৩২ এবং ২০৩৫ সালে প্রতিবেদন দুটি দেওয়ার কথা।
প্রকল্পের আরেক কমপোনেন্ট ম্যানেজার ড. রেজাউল বাশার সিদ্দিক জানান, উত্তরণ টেকসই করতে মসৃণ উত্তরণ কৌশল নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসএসজিপির পরিচালক ও ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজীজ।