একের পর এক নামীদামি ফুটবলার এনে প্রো লিগকে নক্ষত্রপুঞ্জ বানাতে চাইছে সৌদি আরব। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর করিম বেনজেমা, এনগোলো কান্তে, রবার্তো ফিরমিনো, হাকিম জিয়েশ, এদুয়া মেন্দি, রুবেন নেভেসদের মতো তারকাদের এনে লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়েও যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
সৌদি ক্লাবগুলো টনি ক্রুসের ওপরও পাখির চোখ করে রেখেছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়েছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার।
তবে রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের সিদ্ধান্ত একা একা নেননি ক্রুস। স্ত্রী জেসিকা ফারবারের অনুমতি নিয়েই চুক্তিপত্রে সই করেছেন। জার্মান টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটিএল’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমার স্ত্রীর চাওয়াতেই এটা করেছি। সে রিয়ালে আমাকে আরও এক বছর থাকার অনুমতি দিয়েছে। বলেছে, “তোমার যা ভালো মনে হয়, করো।” আমি ওর কথাই মেনে নিয়েছি।’
৩৩ বছর বয়সী ক্রুস রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির স্কোয়াডে গত মৌসুমে নিয়মিতই ছিলেন। সব মিলিয়ে ৫২ ম্যাচে ২ গোল করার পাশাপাশি ৬টি গোলে সহায়তা করেছেন। মাঠে ছিলেন মোট ৩ হাজার ৮১৩ মিনিট। চ্যাম্পিয়নস লিগের গত মৌসুমে অ্যাটাকিং থার্ডে বল পাঠিয়েছেন ১২৮ বার, যা অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি। আর সতীর্থদের উদ্দেশে নির্ভুল পাস বাড়িয়েছেন ৯৩.৮ শতাংশ। পরিসংখ্যান দেখেই আন্দাজ করা গিয়েছিল, ক্রুসকে আগামী মৌসুমেও দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করবেন আনচেলত্তি। হয়েছেও তাই।
রিয়ালের হয়ে সম্ভাব্য সবকিছু (৯ মৌসুমে ২০ ট্রফি) জেতা হয়ে গেলেও এখনো নাকি শিরোপার ক্ষুধা কমেনি ক্রুসের। সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সে কথাও, ‘আগের নয় মৌসুমের মতো আগামী মৌসুমও ভালো না কাটার কারণ দেখি না। আমি এখনো খেলাটাকে উপভোগ করি। ট্রফির জন্য এখনো আগের মতোই ক্ষুধার্ত।’
এক ক্লাবে দীর্ঘ সময় খেলার পরও অনেক সময় বিদায়ী মুহূর্ত সুখকর হয় না। এমন উদাহরণ অনেক আছে। তবে ক্রুস এ ব্যাপারে বেশ সচেতন, ‘ফুটবলারদের বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে, এমন নেতিবাচক উদাহরণ অনেক আছে। যাদের বেঞ্চে বসে থাকার সময় চলে আসে, মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হয় না; তাদের মানুষ মনে রাখে না। তবে আমি এত দিন অপেক্ষা করব না।’
সাক্ষাৎকারের শেষে একটি মিষ্টি-মধুর গল্প শুনিয়েছেন ক্রুস। তাঁর দাদা নাকি ভেবেছিলেন, রিয়ালের হয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর খেলাই ছেড়ে দেবেন। তবে চুক্তি নবায়নের পর দাদা তাঁকে যে বার্তা পাঠিয়েছেন, তাতে তিনি শিহরিত, ‘আমার দাদা আমাকে লিখেছে, “খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ।” এটা পড়ার পর আমি শিহরিত হয়েছিলাম।’