হিজাব না পরেই বিদেশে দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ইরানের নারী দাবাড়ু সারা খাদেম। এতে সারা খাদেমের বিরুদ্ধে ইরানে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর সারা স্পেনে চলে যান।
বুধবার তাকে নাগরিকত্ব দিয়ে স্পেনে একটি সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মঙ্গলবার স্পেনের মন্ত্রিসভা খাদেমকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে।
২৬ বছর বয়সী কুর্দি এই ইরানি দাবাড়ুর পুরো নাম সারাসাদাত খাদেমালশারিয়েহ। তিনি গত বছর ডিসেম্বরে কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত এফআইডিই ওয়ার্ল্ড র্যাপিড এবং ব্লিত্জ চেজ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের সময় মাথায় হিজাব পরেননি। ইরানে নারীদের জন্য মাথায় হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। এমনকি দেশটির নারী ক্রীড়াবিদদেরও হিজাব মাথায় রেখেই খেলাধূলায় অংশ নিতে হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে মাথায় ঠিকমত হিজাব না পরার কারণে ভাইয়ের সঙ্গে তেহরান যাওয়া কুর্দি তরুণী মাশা আমিনিকে আটক করে দেশটির নীতি পুলিশ। তিন দিন কোমায় থাকার পর পুলিশি হেফাজতে ২২ বছরের মাশার মৃত্যু হয়।
তার পরিবার থেকে দাবি করা হয়, গ্রেফতারের সময় পুলিশ মাশার মাথায় আঘাত করেছিল। যে কারণে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার জ্ঞান আর ফেরেনি। মাশার দাফনের দিন তার শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যে বিক্ষোভ পরে পুরো ইরান জুড়ে ছড়িয়ে যায় এবং টানা কয়েকমাস ধরে চলে।
বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় ইরান সরকার। নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে প্রাণ হারায় কয়েকশ বিক্ষোভকারী; আটক হয় কয়েক হাজার। তাদের মধ্য থেকে বিচারে কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়।
হিজাব কাণ্ডে ইরান যখন উত্তাল ওই সময় বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাতে সারা হিজাব না পরেই খেলায় অংশ নেন এবং এটা নিয়ে তার মধ্যে কোনো ধরণের অনুতাপ নেই বলেও জানিয়েছেন এই দাবাড়ু।