দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। হাসপাতাল ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাসায় থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক রোগী। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
দিনাজপুর :দিনাজপুরে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গত বুধবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত ছয় জন রোগী। এই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার জন। গত বুধবার এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০ জন রোগী। সব মিলিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন সর্বমোট ৮৬ জন রোগী।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দিনাজপুর জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৩৯ জন। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানোর কথা বললেও দিনাজপুরে নেই তেমন জোরদারমূলক প্রচার-প্রচারণা। এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা তথ্য অফিসের সহকারী পরিচালক মো. রোস্তম আলী জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে গত ১১ জুলাই থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। তবে তা প্রতিদিন নয়।
ফরিদপুর: ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রমা বিশ্বাস (২৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রমা বিশ্বাস বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা যান। তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২২৫ জন রোগী। এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ৮৭১ জন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মধুখালী (ফরিদপুর): মধুখালীতে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা গেছে, ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটির ৩য় ও ৪র্থ তলায় নির্ধারিত ইউনিট রাখা হয়েছে। সেখানে মশারি টানিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালটির দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মুক্তি রানী রায় জানান, আমাদের এ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা রোগীদের তরল খাবারের পাশাপাশি স্যালাইনের পানি, ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে নিয়মিত কাউন্সিলিংও করা হচ্ছে। মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আ. সালাম বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের বেশির ভাগ এখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। যাদের বেশি সমস্যা তাদেরকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হচ্ছে।