৪৭ বছরের অভিনয়জীবন বর্ষীয়ান অভিনেতা তারিক আনাম খানের। পেয়েছেন একাধিকার জাতীয় পুরস্কার। শুধু অভিনয়ের কারণেই মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে খ্যাত নন তিনি। জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ, মোশাররফ করিমসহ আরও অনেক মেধাবী শিল্পীর শুরুটা হয়েছিল মঞ্চে তারিক আনাম খানের হাত ধরে। নির্দেশক ও নাট্যকার হিসেবেও সমাদৃত হয়েছেন তিনি। কাজ করেছেন হলিউডের ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এইজ অফ আলট্রন’ সিনেমার বাংলাদেশ অংশের প্রোডাকশন সুপারভাইজার হিসেবে।
অথচ প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ একবার এই গুণী অভিনেতার মুখের ওপর বলেছিলেন- ‘আপনি তো অভিনয়টা ভালো জানেন না। আপনার সাথে আমি কাজ করতে চাই না। কিন্তু আমার স্ত্রী শাওন, সহকারী জুয়েল রানারা বলছেন, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’য় জমিদার চৌধুরী হেকমত আলী’র চরিত্রে নাকি আপনার বিকল্প নেই। আপনি কি আমার শেষ সিনেমায় অভিনয় করবেন?’ তারিক আনাম খান সেদিন হুমায়ূন আহমেদের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৯ বছরের পুরনো বরফ ভেঙেছিলেন।
সম্প্রতি মাছরাঙা টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘রাঙা সকাল’-এর ঈদ বিশেষ পর্বে অতিথি হয়ে এসে তারিক আনাম খান তার বর্ণাঢ্যময় জীবনের না বলা অনেক গল্প শেয়ার করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে বিটিভিতে জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’-এ বিখ্যাত ‘বাকের ভাই’ চরিত্রে আমার অভিনয় করার কথা ছিল। এমনকি আমি মানসিকভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু যে কোনো কারণেই হোক শেষ পর্যন্ত আমাকে বাদ দেওয়া হয়। যদিও আসাদুজ্জামান নূর ‘বাকের ভাই’ চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। আমি হয়তো তার মতো এতটা ভালো-ও করতে পারতাম না।
কিন্তু ওই সময়ে ভীষণ অভিমান হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের ওপর। যদিও ওই ধারাবাহিকের অন্য আরেকটি চরিত্রে হুমায়ূন আহমেদ পরে আমাকে প্রস্তাব করেন। আমি রাগ করে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিই। তখন আবার হুমায়ূন আহমেদ আমার ওপর পাল্টা অভিমান করেছিলেন।
দুজন মিলে সেই অভিমানের পাহাড় ভাঙতে সমর্থ হই ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র কাজ করতে গিয়ে। পরে ‘রুবিকস্ কিউব’ নাটকে কাজ করতে গিয়ে সম্পর্ক আরও মধুর হয়। তবে সুখের সময় যে খুব অল্প- বুঝতে পারিনি।
১৯ জুলাই, ২০১২ সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ’। রুম্মান রশীদ খান ও খালেদার উপস্থাপনায় মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘রাঙা সকাল’-এর এই বিশেষ পর্বটি প্রচারিত হবে ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল ৭টা থেকে ৯টায়। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছেন জোবায়ের ইকবাল।