কম্বোডিয়া থেকে চুরি হওয়া ৯ম এবং ১০ম শতাব্দীর তিনটি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য ফেরত দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গ্যালারি (এনজিএ)। ভাস্কর্যগুলোর মূল উৎস খুঁজে বের করার জন্য দেশ দুটি প্রায় এক দশক ধরে তদন্ত চালিয়ে আসছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়ে বিবিসি।
কম্বোডিয়ার সরকার ঐতিহাসিক পদক্ষেপকে ‘অতীতের অন্যায় সংশোধনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে। সম্প্রতি লুণ্ঠিত সাংস্কৃতিক পণ্য ফেরত দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী চাপের সৃষ্টি করা হয়েছে। এরই মধ্যে চুরি হওয়া কম্বোডিয়ান প্রাচীন শিল্পকর্ম ফেরত দেওয়ার ঘোষণা আসে।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল গ্যালারি (এনজিএ) বলছে, তারা ২০১১ সালে ব্রিটিশ প্রত্নবস্তু পাচারকারী ডগলাস ল্যাচফোর্ডের কাছ থেকে ভাস্কর্যগুলো ২.৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে কিনেছিল। ডগলাস ২০২০ সালে মারা যায়।
এবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, মূর্তি তিনটি ১৯৯৪ সালে কম্বোডিয়ার পূর্বে তুবাং খমুমের একটি মাঠ থেকে খনন করে উদ্ধার করা হয় এবং থাইল্যান্ডের সীমান্ত পেরিয়ে আন্তর্জাতিক শিল্প ব্যবসায়ীদের কাছে তা পাচার করা হয়। সবশেষ এগুলো ডগলাস ল্যাচফোর্ডের হাতে এসে পৌঁছায়।
ল্যাচফোর্ডের মেয়ে নওয়াপান ক্রিয়াংসাক এনজিএ এবং কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও চারুকলা মন্ত্রণালয়ের গবেষকদের সঙ্গে পণ্যগুলো ফেরত দিতে সহায়তা করার জন্য কাজ করেছিলেন। নমপেনের নতুন ঠিকানায় শিল্পকর্মগুলো স্থানান্তর করার আগে ক্যানবেরার এনজিএ-তে তিন বছরের জন্য প্রদর্শন করা হবে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার শিল্পকলা বিষয়ক বিশেষ দূত সুসান টেম্পলম্যান বলেছেন, ‘ঐতিহাসিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার এটি একটি সুযোগ। এছাড়াও আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী এবং আমাদের বোঝাপড়াকে আরও গভীর করার সুবর্ণ সুযোগ এটি।’
কম্বোডিয়া তার প্রাচীন মন্দির থেকে চুরি যাওয়া হাজার হাজার পুরাকীর্তি পুনরুদ্ধার করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে উদ্ধার হওয়া বেশ কিছু পুরাকীর্তি ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিতীয়বারের মতো তার সংগ্রহ থেকে চুরি করা শিল্প অপসারণ করেছে এনজিএ।
২০২১ সালে গ্যালারিটি ১১ শতকের প্রাচীন ভারতীয় প্রত্নবস্তুর একটি সিরিজ ফেরত দিয়েছে। এগুলো পুরাকীর্তি পাচারকারী সুভাষ কাপুর এবং নিউইয়র্কের প্রয়াত আর্ট ডিলার উইলিয়াম উলফের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।
বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিকভাবে উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তিগুলো তাদের প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।