কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তোশাখানা মামলায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে ৩ বছরের সাজা দিয়েছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পিটিআই চেয়ারম্যান তার আইনজীবীদেরকে বুধবার বলেছেন তাকে যেন জেল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখানে থাকতে চান না।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ইমরান খান এবং তার আইনজীবীদের মধ্যকার বৈঠকের বিষয়ে অ্যাটক কারাগারের সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
ইমরান খান তার আইনজীবীদের বলেন, ইসলামাবাদের অ্যাটক কারাগারে তিনি এমন একটি সেলে রয়েছেন যেখানে দিনে মাছি এবং রাতে পোকামাকড়ের উৎপাত। তিনি এখানে থাকতে চান না। তাকে যেন এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত ইমরান খান কারাগারে বন্দী থাকায় অসন্তুষ্ট এবং চিন্তিত বলে জানিয়েছেন।
৭০ বছর বয়সী ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদকে শনিবার তার লাহোরের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে একটি আবেদন দাখিল করেন।
ইমরান খানের কৌঁসুলি নাঈম হায়দার পাঞ্জোথাকে সোমবার জেল কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি পিটিআই চেয়ারম্যানকে দেখার পর বলেছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ‘সি-ক্লাস জেল সুবিধা’ প্রদান করে দুঃখজনক পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছে।
পাঞ্জোথা আরও বলেন, পিটিআই প্রধান এই ধরনের অসুবিধা সত্ত্বেও উচ্চ মনোবল ধরে রেখেছেন। প্রয়োজনে তিনি তার জীবনকাল জেলে কাটাবেন তাও দাসত্বের কাছে মাথা নত না করার শপথ করেছেন।
তবে সূত্র জানায়, পিটিআই চেয়ারম্যান তার আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কারাগারের পরিবেশ নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন। এই সেলটি দিনেরবেলা মাছি এবং রাতেরবেলা পোকামাকড়ের দখলে থাকে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে লাহোরে তার জামান পার্কের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উপহার কেনা-বেচা করেছেন। উপহারগুলোর মূল্য ছিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার ডলারের বেশি।
তবে ইমরান খান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পিটিআই ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) প্রধান বিচারপতি আমের ফারুকের কাছেও আবেদন করেছে যেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অ্যাটক জেল থেকে আদিয়ালা জেলে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে ৯ মে ইসলামাবাদে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ইমরান খানকে। তখন তার সমর্থকরা দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভ শুরু করে। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সেসময় সারাদেশে সহিংস বিক্ষোভ এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগে ১৪০টির বেশি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, সহিংসতা, ব্লাসফেমি, দুর্নীতি এবং হত্যার মতো অভিযোগ রয়েছে।