দেশি পেঁয়াজ সরবরাহের পাশাপাশি দুই মাসে ৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তার পরও সরবরাহ ঘাটতি ও আমদানির খরচ বেশি হওয়ার যুক্তিতে ঢাকার বাজারে তিন-চার দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০-১৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন কৃষকের হাতে পেঁয়াজ নেই। যেটুকু আছে, তা পাইকারি বিক্রেতাদের হাতে। যে কারণে সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। এই অজুহাতে পাইকারি বিক্রেতারা মূল্যবৃদ্ধির কথা বলছেন। অথচ দেশি পেঁয়াজের এই সরবরাহ ঘাটতি পূরণে গত জুনের ৫ তারিখ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
ঢাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়, কোথাও কোথাও অবশ্য ৮৫ টাকাও দাম চাইতে দেখা গেছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেই এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। একইভাবে বেড়েছে আমদানি করে আনা পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, কাওরান বাজারের আড়তে গতকাল বিকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারিতে ৭৫-৭৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে গেলে তা যে দামে বিক্রি হবে, তা বর্তমান খুচরা দামকে আরো বাড়িয়ে দেবে। কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বিক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন এবং একেবারে বাছাইকৃত বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়।
টিসিবির বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, গত বছর এই সময়ে যে দামে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে প্রায় ৭৭ শতাংশ বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গত কয়েক বছর ধরে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক উত্পাদন ৩৫ লাখ টনের বেশি। আর পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৮ লাখ টন। উত্পাদন বেশি হলেও আমদানি করতে হয়, কারণ ২৫ শতাংশ বা তারও বেশি উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জটিলতায় নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, আমদানিকারকরা গত দুই মাসে ১২ লাখ ৩৪ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছে। যেখান থেকে আমদানি হয়েছে ২৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। এতে করে বাজারে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।