গণমাধ্যম সূত্রে সবকিছু আগেই জানা গিয়েছিল। প্যারিসে বসেই আল হিলালের জার্সি পরে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করে নেইমার নিজেও নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন ব্যাপারটা। তারপরও দলবদলে আনুষ্ঠানিক চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। কারণ, এক ক্লাবের কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ার পরও অনেক ফুটবলারই শেষ মুহূর্তে পলটি মেরে অন্য ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন। এই নেইমারই ২০১৩ সালে অনেকটা এমন কাণ্ডই ঘটিয়েছিলেন। তার রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্তই হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে মত পালটে নেইমার যোগ দিয়েছিলেন বার্সেলোনায়। তবে এবার এমন কিছু ঘটেনি। আগেই যাদের জার্সি গায়ে তুলেছেন, পলটি মেরে তাদের হতাশ করেন কীভাবে! পিএসজি ছেড়ে তাই সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালেই যোগ দিলেন নেইমার।
সৌদি ক্লাবটির সঙ্গে গত পরশুই আনুষ্ঠানিক চুক্তিটা সেরে ফেলেছেন ব্রাজিল তারকা। পূর্ব খবর মতোই আল হিলালের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছেন নেইমার। চুক্তির পর সৌদির ক্লাবটির জার্সি হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নেইমারকে পরিচয়ও করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চুক্তির পরই দলের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে তাকে। দেওয়া হয়েছে ১০ নম্বর জার্সিও। তবে সৌদি ক্লাবটিতে নেইমার কত পারিশ্রমিক পাবেন তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইএসপিএনের সর্বশেষ খবর, আল হিলালে নেইমার বার্ষিক পারিশ্রমিক পাবেন ১০ কোটি ইউরো। আগে শোনা গিয়েছিল ৯ কোটি ইউরোর কথা। তবে একটা গণমাধ্যমে ১৬ কোটি ইউরোর দাবিও করেছিল। তাকে বিক্রি করে পিএসজি পাচ্ছে ৯ কোটি ইউরো।
বয়স মাত্র ৩১। নেইমার চাইলে আরও কয়েকটা মৌসুম ইউরোপেই কাটাতে পারতেন। মেসি-রোনালদোর অবর্তমানে প্রথম বারের মতো ব্যালন ডি’অর জয়ের একটা প্রচেষ্টাও চালাতে পারতেন। কিন্তু সেই সুযোগ পায়ে ঠেলে তিনি ফুটবলের অনুর্ভর ভূমি হিসেবে পরিচিত, সৌদি আরবে যোগ দেওয়ায় তার এবং ব্রাজিল ভক্তরা হয়তো খানিকটা হতাশই। তবে নেইমার কিন্তু আল হিলালে যোগ দিতে পেরে মহাখুশি।
আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর এক ভিডিও বার্তায় নেইমার উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেছেন, ‘আমি এখানে সৌদি আরবের, আমি এখন আল হিলালের। আমি ইউরোপে অনেক কিছুই অর্জন করেছি, দারুণ কিছু মুহূর্ত উপভোগ করেছি। কিন্তু আমি সব সময়ই এক জন বৈশ্বিক খেলোয়াড় হতে চেয়েছি। নতুন চ্যালেঞ্জ ও নতুন জায়গায় নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে নিজেকে পরীক্ষা করতে চেয়েছি। আমি চাই নতুন ক্রীড়াঙ্গনে ইতিহাস লিখতে। এজন্য আমি সৌদি আরবে যাচ্ছি। সৌদি প্রো লিগ যথেষ্ট শক্তিশালী এবং এই মুহূর্তে মানসম্পন্ন অনেক খেলোয়াড় আছেন।’
সখ করে সৌদিতে আসলেও নেইমারকে কিন্তু জীবনের অনেক শখই বাদ দিতে হবে। রাত-বিরাতে নৈশক্লাবে যাওয়া, ইচ্ছা হলেই পার্টি আয়োজন, মদ্যপান, নিষিদ্ধ নারীদের সঙ্গে উদ্যাম নৃত্য—এসবই নেইমারের নেশা। কিন্তু মুসলিম দেশ সৌদিতে এসবের কিছুই করতে পারবেন না তিনি!