ঈদের ছুটিতে নগরীর বিভিন্ন পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের কোলাহলে মুখর সব পর্যটনকেন্দ্র। উন্মুক্ত বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কাজির দেউড়ি শিশুপার্ক, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ভাটিয়ারি গলফ ক্লাব, কর্ণফুলী শিশুপার্কে ছিল শিশু ও অভিভাবকদের ভিড়।
এদিকে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যাওয়ায় নগরী এখনো অনেকটা ফাঁকা রয়েছে।
অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা, বন্দর, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল সর্বত্র আগের সেই ভিড় দেখা যায়নি। নগরীর ব্যস্ততম সড়কের চিরচেনা অসহনীয় যানজটের দৃশ্যও চোখে পড়েনি। বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন চলাচল করলেও সেগুলোতে নেই যাত্রীর ভিড়। নগরীর অধিকাংশ সড়ক এখনো ফাঁকা। কোথাও যানজট নেই, নেই বিষাক্ত কালো ধোঁয়া।
সড়কে পর্যাপ্ত সংখ্যক গণপরিবহন না থাকায় রিকশা এবং সিএনজি অটোরিকশা করে মানুষ যাচ্ছে গন্তব্যে। ফলে লোকজনকে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। রাস্তাঘাট, অলিগলি এখনো কোলাহলমুক্ত।
ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ ঘোষ ভোরের কাগজকে বলেন, ঈদের পরের দিন সোমবার প্রায় ৪ হাজার দর্শনার্থী এখানে আসে। তবে আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকেই ভিড় বহুগুণ বেড়েছে। দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে পার্কে কিছু ইভেন্ট রাখা হয়েছে। শিশুদের জন্য যেমন রয়েছে ম্যাজিক শো, তেমনি বড়দের জন্য রয়েছে গেইম শো। এছাড়া রয়েছে ড্যান্স প্রতিযোগিতা। ফয়’স লেকে বেশ কিছু আধুনিক রাইড আছে। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড। এসব রাইডে শিশুদের পাশাপাশি তরুণদেরও চড়তে দেখা গেছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ভাটিয়ারি গলফ ক্লাব, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠ পার্ক, ওয়ার সিমেট্রি, সিআরবি, নেভাল এলাকা, শিশু পার্কে দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে। নগরীর বাইরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত, ভাটিয়ারি পাহাড় পার্ক, সীতাকুণ্ডের বেড়িবাঁধের পাশে সমুদ্র সৈকত, বাঁশখালী ইকোপার্ক ও সমুদ্র সৈকত, রাঙ্গুনিয়ার এভিয়ারি পার্কসহ জেলার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিনোদন স্পটেও বিনোদনপ্রেমী মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটছেন। পতেঙ্গা সৈকত হাজারো মানুষের মিলনমেলায় মুখর। কেউ মেতে ওঠেন সমুদ্রস্নানে, অনেকে চড়েন স্পিডবোটে, কেউ কেউ ঘোড়ার পিঠে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান সৈকতে। বিকাল নামতেই মানুষের সমাগম আরো বেড়ে যায়। এছাড়াও মেরিন ড্রাইভ সড়কও ছিল মানুষে ঠাসা।
পতেঙ্গা থানার ওসি কবীর হোসেন বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সৈকতে ফুট পেট্রল, মোটরসাইকেল, মোবাইল টহল বাড়ানো হয়েছে, যাতে নারী পর্যটকরা কোনো হয়রানির শিকার না হয়।