শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১১ রান, আর আফগানিস্তানের ২ উইকেট। স্ট্রাইকপ্রান্তে নাসিম শাহ আর নন স্ট্রাইকে শাদাব খান। উইকেটে সেট শাদাব চাইছিলেন তিনি যেন পরের বলেই স্ট্রাইকে যেতে পারেন। তাই বল ডেলিভারির আগেই স্টাম্প ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। বল ডেলিভারি না দিয়ে শাদাবকে ‘মানকাড’ আউট করে দেন বোলার ফজলহক ফারুকী। তবে তাতেও শেষ পর্যন্ত জয় পায়নি আফগানরা। শেষ ওভারে শেষ ২ ব্যাটসম্যান নাসিম ও হারিস রউফ প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন দারুণ দক্ষতায়। ৩০১ রান তাড়ায় ১ বল হাতে রেখে ১ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান।
৩ ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে বড় জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাবর আজমের দল।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা আফগানিস্তানের মতো না হলেও কোনো উইকেট না হারিয়েই পঞ্চাশ পার করে পাকিস্তান। ৫২ রানের মাথায় বিদায় নেন ফখর জামান (৩০)। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ফজল হক ফারুকীর শিকার হন তিনি।
দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ খেলতে থাকেন ওপেনার ইমাম-উল-হক ও অধিনায়ক বাবর আজম। ১১৮ রান আসে এই জুটি থেকে। তবে মড়ক শুরু হয় ১৭০ রানের মাথায় বাবর (৫৩) বিদায় নিলে। ২১১ রান তুলতেই হারায় প্রথম ৬ উইকেট। সপ্তম উইকেটে ইফতিখারকে নিয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়েন শাদাব। ইফতিখার ধীরে খেললেও কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন শাদাব। শেষ ওভারে আউট হওয়া শাদাবের ৩৫ বলে ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংসেই মূলত জয়ের ঘ্রাণ পায় পাকিস্তান। পরে বাকি কাজটুকু সারেন নাসিম ও রউফ।
এর আগে, প্রথমে ব্যাটিং করে ৩০০ রানের বড় সংগ্রহ তোলে আফগানিস্তান। শ্রীলংকার হাম্বানটোটায় এদিন টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদি। শুরুর দিকে বেশ সাবধানী ছিলেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। গুরবাজ কিছুটা আক্রমণাত্মক থাকলেও ইব্রাহিম ছিলেন ধৈয্যের প্রতিমূর্তি হয়ে।
ওপেনিং জুটিতে আসে ২২৭ রান। সবমিলিয়ে ওপেনিংয়ে এটি আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বেোচ্চ রানের রেকর্ড, আর পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। গত মাসেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে ২৫৬ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুই ওপেনার।
সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ইব্রাহিম জাদরানও। তবে ২২৭ রানের মাথায় উসামা মীরের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ইফতিখার আহমেদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১০১ বলে ৮১ রান করে আউট হন এই ওপেনার। ২৫৬ রানের মাথায় ১৫১ রান করে গুরবাজও বিদায় নেন। ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনিই প্রথম সেঞ্চুরি করলেন। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো আফগান ব্যাটারের সর্বোচ্চ রান ছিল ৯৭। শেষদিকে আফগানিস্তানকে তিনশ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কারিগর মোহাম্মদ নবী (২৯) ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি (১৫*)।
পাকিস্তানের কোনো বোলারই এদিন খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে শেষদিকে ভালো করেছেন শাহিন আফ্রিদি। শেষ পর্যন্ত ১০ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন নাসিম শাহ ও স্পিনার উসামা মির।