টেকসই ও সবুজ অর্থায়নে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় কমিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে মার্চ প্রান্তিকে তার আগের প্রান্তিকের চেয়ে অর্থায়ন কমেছে এক হাজার ৬২ কোটি টাকা। একই সময়ে টেকসই খাতে চার হাজার ৪০৯ কোটি টাকার অর্থায়ন কমেছে।
অনিয়ন্ত্রিত কার্বন নিঃসরণে বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা ও পানি বৃদ্ধি এবং মাটির লবণাক্ততা। ঝুঁকিগুলোকে শনাক্ত করে তা বন্ধে শুরু হয়েছে নানামুখী কার্যক্রম। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছিলো বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই (জানুয়ারি-মার্চ) হঠাৎ করে এই খাত দুটিতে বিনিয়োগ কমিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
ঝুঁকি কমাতে এই দুই খাতে অর্থায়নের লক্ষ্য বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ২০২২ সালেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এসব খাতে অর্থায়নে নজর বাড়িয়েছিল। এ বছরের মার্চ শেষের হিসাবে বিনিয়োগ কমেছে এসব খাতে। তবে বর্তমানে এখন দেশের অনেক ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ৩৬ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করেছে ৩৫ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। একই সময়ে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে ব্যাংকগুলো দুই হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা ব্যাংকগুলোর মোট মেয়াদি ঋণের চার দশমিক ১৬ শতাংশ।
এদিকে মার্চ প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে এক হাজার ৩০৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে আট হাজার ৩৯ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট মেয়াদি ঋণের ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফিন্যান্স পলিসি অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো সাসটেইনেবল ফিন্যান্সের ১১টি ক্যাটাগরিতে মোট ৬৮টি পণ্যের বিপরীতে ঋণ দিতে পারে। এসব পণ্যের অধিকাংশই সবুজ অর্থায়নের অন্তর্ভুক্ত।
টেকসই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কৃষি, সিএমএসএমই, পরিবেশবান্ধব কারখানা, সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল প্রকল্পে অর্থায়ন। যদিও চলমান ঋণের ২০ শতাংশ টেকসই প্রকল্পে দেওয়ার নির্দেশ আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। এদিকে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন, বর্জ্য পরিশোধনাগার বা ইটিপি নির্মাণ, পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন অন্যতম। এই খাতে মোট মেয়াদি ঋণের পাঁচ শতাংশ ঋণ দেওয়ার শর্ত রয়েছে।