আমরা খবর পাচ্ছি, এখন রাজধানীসহ সারা দেশে ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর ও কাশিতে ভুগছে প্রায় সব বয়সী মানুষ। এটা মৌসুমি জ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জা হতে পারে। ডেঙ্গু ও করোনা হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। টাইফয়েডের আশঙ্কাও রয়েছে।
এটা এখন স্বাভাবিক ও সাধারণ সমস্যা। তার পরও আমি বলব, জ্বর যদি চার-পাঁচ দিন স্থায়ী হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। চিকিৎসক পরামর্শ দিলে করোনা অথবা ডেঙ্গু পরীক্ষা করান। সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। সাধারণ সর্দি-জ্বরের পাশাপাশি দেশে এখন করোনা সংক্রমণও চলছে। গত মঙ্গলবার ৯ জনের এবং গতকাল বুধবার পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে যাদের বয়স বেশি, হার্ট, কিডনি, লিভার ও রক্তচাপের সমস্যা আছে; ডায়াবেটিস আছে, তাদের ঝুঁকি বেশি। তাদের কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা করা চলবে না। জটিল পরিস্থিতি নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাসপাতালে যাওয়া মানেই বিড়ম্বনা ও কষ্ট রোগীর স্বজনদের; আর্থিক বিষয়টি তো রয়েছেই। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে কেউ খামখেয়ালি বা ড্যামকেয়ার আচরণ করবেন না।
সর্দি-জ্বর ও কাশি হলে প্রথমে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। হালকা গরম পানি দিয়ে কুলি করা যেতে পারে। আদা, এলাচ, জিংক এগুলো ব্যবহারে উপকার পাওয়া যেতে পারে। এন্টি হিস্টামিনজাতীয় ওষুধও খেতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক নেবেন না। সর্দি-জ্বর ঘরে ঘরে হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক কিছু নয়। কিন্তু সাধারণ সর্দি-জ্বর না হয়ে করোনাও হতে পারে। অনেকে সাধারণ সর্দি-জ্বর মনে করে করোনা পরীক্ষা করাতে চান না। করোনা হলেও অঘটন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘটে না। ঘরে থেকে চিকিৎসা নিয়ে বেশির ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। তার পরও অবহেলা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সর্দি-জ্বরের অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হলে বাইরে বের হওয়া কমাতে হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে রোদের মধ্যে বের হওয়া চলবে না। এখন আবহাওয়াও অনুকূল নয়। প্রচণ্ড গরম। অনেকে এই গরমে রাস্তাঘাট থেকে শরবত, আইসক্রিম ও নানা ধরনের ঠাণ্ডা পানীয় পান করেন। এটা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাচ্চারা যেন বাইরে রোদের মধ্যে ঘোরাঘুরি, দৌড়াদৌড়ি, লাফালাফি না করে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। আবারও বলছি, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে শুধু করোনা থেকে রক্ষা নয়, সর্দি-জ্বরসহ নানা ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকেও নিরাপদ থাকা সম্ভব। মাস্ক ব্যবহার আমাদের অনেক রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে পারে। বিশেষ করে সর্দি-কাশি, অ্যাজমা—এসব রোগ থেকে মাস্ক আমাদের নিরাপদ রাখতে পারে।