ব্রিটেনের প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার প্রেমিক দোদি আল ফায়েদের বাবা মিশরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ মারা গেছেন। তার ছেলে দোদি প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। দোদি ও ডায়ানার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীর এক দিন আগে আল ফায়েদ গত বুধবার মারা গেছেন বলে তার পরিবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে জানিয়েছে। মৃত্যুর সময় মোহাম্মদ আল ফায়েদের বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। ছেলে দোদি ও ডায়ানার মৃত্যুর পেছনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। প্রিন্স ফিলিপের নির্দেশে তাদের হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল ফায়েদের।
সদ্য প্রয়াত মোহাম্মদ আল ফায়েদের জন্ম হয় মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরে। শুরুতে তিনি ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করতেন। পরে সেলাই মেশিনের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। প্রথমে মধ্যপ্রাচ্য ও পরে ইউরোপে তিনি আবাসন, জাহাজ, নির্মাণকাজের ব্যবসা করেন। এভাবেই তিনি নিজের ও পরিবারের ভাগ্য গড়েন। এক পর্যায়ে বিশাল ধনের মালিক হন। লন্ডনের হ্যারডস, ফুটবল ক্লাব ফুলহাম ও প্যারিসের রিট্জ হোটেলের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মালিক ছিলেন আল ফায়েদ। তবে ব্রিটেনে তাকে সব সময়ই ‘বহিরাগত’ মনে করা হতো। নাগরিকত্ব না দেওয়ার কারণে আল ফায়েদ ব্রিটিশ সরকারের অংশ হতে পারেননি। প্রায়ই তিনি ফ্রান্সে চলে যাওয়ার হুমকি দিতেন। ফ্রান্সে আল ফায়েদকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার লিজিয়ন অব অনার দেওয়া হয়েছিল।
১৯৯৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলে দোদি ও প্রিন্সেস ডায়ানা নিহত হওয়ার পর ১০ বছর ধরে আল ফায়েদ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে এটি আসলে হত্যাকাণ্ড। আল ফায়েদের অভিযোগ ছিল, গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাদের হত্যা করা হয়। সে সময় আল ফায়েদকে স্বেচ্ছাচারী, প্রতিহিংসাপরায়ণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আল ফায়েদ সে সময় অভিযোগ করেন, দোদির সন্তানের মা হতে যাচ্ছিলেন ডায়ানা। প্রিন্স ফিলিপ ব্রিটেনের নিরাপত্তা বাহিনীকে ডায়ানাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন আল ফায়েদ। কারণ, প্রিন্স ফিলিপ চাননি ডায়ানা একজন মুসলিমকে বিয়ে করেন এবং তার সন্তানের মা হন।
ডায়ানার নতুন অডিও: দ্বিতীয় সন্তান প্রিন্স হ্যারির জন্মে হতাশ হয়েছিলেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। এ হতাশার কারণ ছিল, প্রিন্সেস ডায়ানা ও তার সংসারে কেন একটি মেয়ে এলো না, তা নিয়ে। প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার নতুন এক অডিওতে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রিন্সের এই হতাশার কথা উঠে এসেছে। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে একাধিক অডিও রেকর্ড করেছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। ১৯৯৭ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর আগে সেগুলো গোপনে লেখক অ্যান্ড্রু মর্টনের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর পর একটি বই লেখেন মর্টন।