আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই বক্তব্যে বিএনপির ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের অপতৎপরতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নির্বাচন নির্দিষ্ট কোনো দলের জন্য জন্য থেমে থাকে না।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের সংবিধান বিধান অনুযায়ী জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভুল রাজনীতির কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিএনপি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করতেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লাগাতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের পথে রাজনীতি করছে।
তিনি বলেন, ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, যুদ্ধাপরাধী ও বিদেশি এজেন্টদের সমন্বয়ে গঠিত বিএনপি কোনো দিনই গণতন্ত্রকে ধারণ করেনি। তারা হ্যাঁ বা না ভোট ও ভোটারবিহীন প্রহসনমূলক নির্বাচন আয়োজন, রউফ, সাদেক ও আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের পথে হেঁটেছে বার বার।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি তাদের ‘ভুয়া ভোটার ব্যাংক’ নষ্ট হওয়ায় এবং পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের সুযোগ না থাকায় নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভয় পায়। বিএনপি গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জাতীয় অগ্রগতিকে ধারণ করে না, উল্টো গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্রকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এদেশে যাদের হাত ধরে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে, হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সূচনা হয়েছে— আজ তারা গণতন্ত্রের কথা বলে! হাওয়া ভবনের দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের গডফাদার এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক দর্শনে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের কোনো প্রত্যয় নেই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশের মানুষকে শোষণ করেছে। গণবিরোধী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। বহিরাবরণে লুটপাটতন্ত্রের নীতি ও অন্তরে অগণতান্ত্রিক মানসিকতা ধারণ করে বিএনপি সবসময় শাসন করেছে। তাই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি তাদের চোখে পড়ে না। এ পর্যন্ত দেশের মানুষের স্বপ্নের যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, সেসব প্রকল্প নিয়ে তারা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সর্বদা গণতান্ত্রিক নীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধকে ধারণ করে রাজনীতি করে আসছে। আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দীর্ঘ স্বৈরশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বেই বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মজবুত ভিত রচনায় বদ্ধপরিকর। এদেশের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিএনপির গাত্রদাহ থেকেই প্রমাণিত হয় তাদের রাজনীতি কেবল ক্ষমতা দখলের, জনকল্যাণের জন্য নয়। বিএনপি নেতাদের আহ্বান জানাই, তাদের রাজনৈতিক দর্শনের চমশার লেন্স পরিবর্তনের জন্য। তাহলেই তারা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি দেখতে সক্ষম হবে।