তিউনিসিয়ার টেনিস ইতিহাসে সবচেয়ে সফল খেলোয়াড় উনস জেবিয়ার। শুধু তাই নয়? দেশটির এযাবতকালের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল এ্যাথলেটও তিনি। ইতোমধ্যেই তার নামের পাশে যুক্ত রয়েছে তিনটি শিরোপা। গত জুনে বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছিলেন তিনি। সর্বশেষ উইম্বলডনের ফাইনাল খেলে গড়েন নতুন ইতিহাস। তিউনিসিয়া তথা উত্তর আফ্রিকার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন ২৭ বছরের এই তারকা। অসামান্য এই অর্জনের স্বীকৃতিও পেলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ কর্তৃক দেশটির ‘গ্রেট মেডেল অব দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অব মেরিট’ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন উনস জেবিয়ার।
গত কয়েক মৌসুম ধরেই বিশ্ব টেনিসে আলো ছড়াচ্ছেন জেবিয়ার। অসাধারণ পারফর্ম করে নিয়মিতই শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। তবে চলতি মৌসুমে যেন আরও একধাপ উপরে উঠে এলেন তিউনিসিয়ান তারকা। বিশেষ করে বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই নম্বর স্থান দখলের পর উইম্বলডনের ফাইনালের টিকেট কেটে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান নিজেকে।
কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। মৌসুমের তৃতীয় মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনালে এলিনা রিবাকিনার কাছে হেরে যান তিনি। আর তাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েন রাশিয়ান বংশোদ্ভূত কাজাখস্তানের রিবাকিনাও। নিজের দেশকে প্রথম এতো বড় সাফল্য উপহার দেন তিনি। তবে শিরোপা জিততে না পারলেও বিশ্ব দরবারে তিউনিসিয়ার পতাকা উঁচিয়ে ধরায় উনস জেবিয়ারকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। এ প্রসঙ্গে কাই সাঈদ বলেন, ‘সে (জেবিয়ার) ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টিং ইভেন্টগুলোতে আমাদের পতাকা উঁচিয়ে ধরে। সে আমাদের তিউনিসিয়ার এ্যাম্বাসেডর। তার এমন সাফল্যের জন্য আমরা অভিনন্দন জানাই। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতেও তার এমন সাফল্যের ধারাবাহিক সফলতা কামনা করি।’ তিউনিসিয়ার ভক্ত-অনুরাগীরা জেবিয়ারকে ‘মিনিস্টার অব হেপিনেস’ অর্থাৎ সুখের মন্ত্রী হিসেবে ডাকেন। ক্রীড়াজগতে অসাধারণ সাফল্যের সৌজন্যে ইতোমধ্যেই তিনি দেশটির যুবক-যুবতীদের আইডলে পরিণত হয়েছেন। উইম্বলডনের শেষ ম্যাচের পর জেবিয়ার বলেছেন, তিনি আফ্রিকার অন্যান্য খেলোয়াড় এবং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবেন। তার ভাষ্যমতে, ‘তরুণ প্রজন্মকে বিশেষ করে যারা আমাদের খেলা দেখেন তাদের আমরা আরও বেশি আশা জাগাতে চাই। সাফল্যের এমন মুহূর্তগুলো ধরে রাখার জন্য সবসময়ই চেষ্টা করে যাব আমরা। তিউনিসিয়ান হিসেবে আমরা গর্বিত এবং এমন গর্বের গল্প আমরা আরও রচনা করতে চাই।’ উইম্বলডনের ফাইনালে হারলেও জেবিয়ার মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম ইউএস ওপেনে নিশ্চই ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মেখেই কোর্টে নামবেন।
সেজন্য তার প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট টরেন্টোতে খেলার জন্য এন্ট্রি লিস্টেও নাম দিয়েছেন তিউনিসিয়ান তারকা। শুধু জেবিয়ারই নন টরেন্টোতে বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৪৩ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ৪১ জনই খেলবেন বলে নিশ্চিত করেছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে বড় চমক সেরেনা উইলিয়ামস। এর ফলে দুই বছরের মধ্যে এবারই প্রথম টরেন্টোর ন্যাশনাল ব্যাংক ওপেনে প্রতিনিধিত্ব করবেন ২৩ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক। এই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ২০১৯ সালে খেলেছিলেন সেরেনা। সেবার কানাডিয়ান তারকা বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কুর বিপক্ষে ফাইনালও খেলেছিলেন বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান। এবার আন্দ্রেস্কুও ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে মূল পর্বে খেলবেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এন্ট্রি লিস্টে শীর্ষ বাছাই হিসেবে খেলবেন ইগা সুইয়াটেক।