মনসুর আলম খোকন
সাঁথিয়া(পাবনা)প্রতিনিধিঃ
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড(কালব) এর ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন/২৩ এর তফসিল ঘোষণায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযাগ উঠেছে। এ ঘটনায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সমিতির অধিকাংশ সদস্য নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৭ মে, ২৩ সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হলেও রেজুলেশন দেখানো হয়েছে ১৫ এপ্রিল, ২৩ তারিখে যা সভার তারিখ ও রেজুলেশনের মধ্যে মিল নেই। এছাড়া ওই সাধারণ সভার আলাচ্যসূচিতে সমিতির নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কোন প্রকার আলাচনা করা হয়নি। সমিতির অধিকাংশ সদস্যের অভিযোগ, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক উপজেলা সমবায় দপ্তরের যোগসাজসে আগামি ২৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচন সম্পন্ন হবে মর্মে তফসিল ঘোষণা করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমিতির বর্তমান মোট সদস্য সংখ্যা ৩২২ জন (পুরুষ ২৪৩, নারী ৭৯জন)। নির্বাচনের জন্য খসড়া ভেটোর তালিকা প্রকাশ না করে ১০০ জনের নাম উল্লেখ করে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, ফলে বাকি সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযাগকারীরা জানান,অনিয়ম করে গঠনতন্ত্র বিরোধী ও অবৈধভাবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী সমিতির কোন সদস্য ঋণখলাপি হলে চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম থাকার কথা নয়। কিন্তু প্রকাশিত চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় অনেক ঋণখলাপি সদস্যের নাম রয়েছে যা গঠনতন্ত্র বিরোধী।
সমিতির সদস্য সাঁথিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিবর রহমান সভাপতি পদে ও ধোপাদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন।তারা অভিযাগ করে বলেন, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তাদের নাম থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে। অপরদিকে সাধারণ সভায় অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেনের পরিচালক পদে প্রার্থীতা বহাল রাখা হয়েছে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কোন আলাচনা ছাড়াই তফসিল ঘোষণা এবং বার্ষিক সাধারণ সভার নোটিসের আগেই রেজুলেশন দেখানো হয়েছে যা অনৈতিক, শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সমিতির বর্তমান সভাপতি ও সাঁথিয়া সরকারি কলজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোক্তার হোসেন জানান, সমিতির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব সম্পূর্ণ রিটার্নিং অফিসারের। সমিতির নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার এবং উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রবিউল আলম জানান, নির্বাচনের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা এবং খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যারা সাধারণ সভায় অনুপস্থিত ছিল তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বাতিলকৃত প্রার্থীদের আপিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, সমিতির রেজুলেশনে দেখানো হয়েছে গত ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণ ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৬৫০ টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থবছর সদস্যদের মাঝে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৮০ লাখ ২২ হাজার টাকা। ঋণ আদায় দেখানো হয়েছে ৭৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৫০ টাকা। গত বছর ২০২২ সালোর ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫০টাকা। অর্থাৎ ঋণ বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রেও গড়মিল রয়েছে।