এখন থেকে পণ্যের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেডসহ বেশ কিছু অতিরিক্ত তথ্য দিতে হবে আমদানিকারক বা তার দেশীয় এজেন্টকে।
সোমবার এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য সম্পর্কে এমনভাবে তথ্য দিতে হবে যার মাধ্যমে পণ্যের গুণমান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ যাচাই করা সম্ভব হয়। এর আগে গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে জানিয়েছিল, আমদানি পণ্যর মূল্য যাচাইয়ের দায়িত্ব থাকবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের। আমদানিতে এলসি (ঋণপত্র) খোলার পূর্বে পণ্যের দাম যাচাইয়ের পাশাপাশি সরবরাহকারীর ক্রেডিট রিপোর্ট দেখতে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরেও আমদানি নীতিমালা মেনে মূল্য পরিশোধ করা হওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং ও রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে অর্থ পাচার প্রতিরোধে আরও শক্ত অবস্থানে যেতে আমদানি পণ্যর আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলারে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সঠিকভাবে আমদানিয় পণ্যের দাম যাচাইয়ের সুবিধার্থে রপ্তানিকারক কর্তৃক প্রেরিত পিআইতে (প্রোফরমা ইনভয়েস) অথবা তাদের এদেশিয় এজেন্ট কর্তৃক সরবরাহকৃত ইন্ডেন্টে আমদানীয় পণ্য সম্পর্কিত তথ্য দিতে হবে ব্যাংকের কাছে।
একটি পিআইয়ের মাধ্যমে একাধিক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রতিটি পণ্যের বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড (যদি থাকে) যা দ্বারা পণ্যের গুণমান পৃথক করা যায় এবং ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ উল্লেখ থাকতে হবে।
একই পিআইয়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সকল পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট ইউনিট যথা কেজি, লিটার অথবা পিস ইত্যাদিতে পরিমাপ না করে তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী পৃথক পৃথকভাবে দেখাতে হবে।
আমদানীয় পণ্য সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিতকরণের জন্য এইচএসকোড এর ৬ ডিজিট এর পরের ২ ডিজিট (মোট ৮ ডিজিট পূর্ণরূপে) উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লেখ্য, আমদানির সঙ্গে আনুপাতিক হারে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। ফলে বাণিজ্য ঘাটতির পাশাপাশি চলতি হিসাবেও বড় ধরনের ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। সংকটে পড়ে ডলারের দর বাড়তে থাকে টাকার বিপরীতে। যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের সঙ্গে ৩ কোটি ডলার সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি মূল্যর পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে পূর্বানুমোদন নেওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। এমন নির্দেশনা জারির পর পণ্য মূল্য বেশি দেখানোতে বেশকিছু এলসি আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে নতুন এলসি খোলার হার কমে আসলেও এখনো পুরোনো এলসির দায় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।