বাংলাদেশ সফরে আজ আসছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্য। মূলত বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আসছেন তাঁরা। এ ছাড়া সরকারসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রসঙ্গ স্থান পাবে। বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে শ্রম পরিবেশ ও অধিকার এবং জিএসপি প্লাসের বিষয়।
এই সফর নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম বলেন, এটি বাণিজ্যবিষয়ক সফর। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি, সামাজিক উন্নতি, নির্বাচন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় আসতে পারে। মূলত এটি একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। তাঁরা ব্যক্তি মালিকানাধীন কারখানাগুলো সফর করবেন। বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নের চিত্র দেখবেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি বলেছেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বাণিজ্য কমিটির সদস্যরা বাংলাদেশে আসছেন। বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে তাঁরা আগ্রহী। মন্ত্রী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধি দল। বর্তমানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জিএসপি বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রয়েছে বলেও জানান তিনি।ইইউ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০ জুলাই পর্যন্ত এই সফর হবে। এ ধরনের সফর আগে হতো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ও ইইউর বাণিজ্য সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো ইস্যুগুলো। ফলে বৈঠকে এ বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশে শ্রম অধিকার, শ্রম আইনের ব্যবহার নিয়ে ইইউর বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ রয়েছে, বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে ট্রেড ইউনিয়ন করতে দেওয়া হয় না। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি রয়েছে পশ্চিমাদের। এ ছাড়া কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের কিছু সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এখন চাইলে হঠাৎ করে তা বদলানো সম্ভব নয়। তবে ইইউকে আমরা বলেছি, দুই-তিন বছরের মধ্যে ইপিজেডের বিষয়টি সমাধানে নিয়ে আসা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে জিএসপি প্লাস নিয়ে আলোচনা হবে। ২০২৬ সালের পর ইইউ থেকে জিএসপি বাতিল হয়ে যাবে। এরপর থেকে ইইউ জিএসপি পল্গাস সুবিধা দেবে। ফলে চাইলেও ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা দিতে পারবে না ইইউ। বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউ জিএসপি প্লাস নিয়ে আলোচনা করছে। তবে জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া বাংলাদেশের জন্য খুব সহজ হবে না। কীভাবে বাংলাদেশ এ সুবিধা পেতে পারে তা নিয়ে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করছে।