রাজধানীর অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাসার ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলেসহ একই পরিবারের তিন জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার ইউনিক ফকিরবাড়ী মোড় এলাকায় মেহেদী হোসেনের মালিকানাধীন পাঁচতলা বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন—মোক্তার হোসেন বাবুল, তার স্ত্রী শাহিদা বেগম ও তাদের ১২ বছরের ছেলে মেহেদী হাসান জয় । নিহতের পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস শ্রমিক আঁখি আক্তার জানান, বাবুল তার পরিবার নিয়ে প্রায় সাত-আট বছর ধরে দুই রুমের ঐ ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন। তারা দুই জনেই আলাদা পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের তেমন পরিচয় ছিল না। শনিবার সন্ধ্যায় চতুর্থ তলার বাবুলদের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পান পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া। এ সময় তাদের ফ্ল্যাটের বাইরের দরজা ভেড়ানো অবস্থায় ছিল। পরে ভেতরে গিয়ে একটি কক্ষের বিছানায় মা ও তার ছেলে জয়ের লাশ ও আরেকটি কক্ষে বাবুলের হাত বাঁধা গলাকাটা লাশ দেখতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘আমিই প্রথম পুলিশে খবর দেই।’
আরেক ভাড়াটিয়া আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমরা তেমন কিছু জানি না। শনিবার দুর্গন্ধ পেয়ে সবাই এসে দেখে এ অবস্থা। প্রথমে জয় ও তার মায়ের লাশ সবাই দেখতে পেলেও পরে আরেক কক্ষে জয়ের বাবা বাবুলের লাশ পাওয়া যায়।’
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) জামাল সিকদার সাংবাদিকদের বলেন, একটি ফ্ল্যাট থেকে একই পরিবারের তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। এখনো কারণ জানা সম্ভব হয়নি। বিস্তারিত পরবর্তী সময় জানা যাবে।’ পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, অন্তত তিন দিন আগে তাদের হত্যা করা হয়েছে। কারণ লাশগুলোতে পচন ধরে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল ।
মোক্তার হোসেন বাবুল ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানার লোহাগড়া গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে। শাহিদার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জোহাব আলী বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে বিছানার ওপর মা ও ছেলের মরদেহ দেখতে পাই। পাশের ঘরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মোক্তার হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।