বিশ্বকাপের পরই টি২০ দল ঢেলে সাজানোর সুযোগ ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ দিয়ে পরীক্ষামূলক একটা চেষ্টাও হয়েছিল।যদিও বেশি দিন নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেননি বিসিবি কর্মকর্তারা।তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজেই নতুনদের ছুড়ে ফেলা হয়।দেরিতে হলেও টি২০ দলকে আবার ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছে বিসিবি।অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে জিম্বাবুয়ে সফরের দলেই দেখা যেতে পারে বেশ কিছু পরিবর্তন।
বিসিবির একজন পরিচালক জানান,সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক আর নুরুল হাসান সোহানকে সহ-অধিনায়ক করা হচ্ছে টি২০ দলে।সাকিবকে বলা হবে জিম্বাবুয়েতেই দলের নেতৃত্ব বুঝে নিতে।তিনি রাজি না হলে সহ-অধিনায়ক সোহান নেতৃত্ব দেবেন তিন ম্যাচের সিরিজে।সেক্ষেত্রে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে মাহমুদউল্লাহকে।বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন রাজি হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ।
তিন ম্যাচ টি২০ এবং তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল জিম্বাবুয়ে যাবে ২৬ জুলাই।৩০ জুলাই এবং ১ ও ২ আগস্ট হবে টি২০ ম্যাচ।৫,৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে ম্যাচ।দ্বিপক্ষীয় এ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করা হতে পারে আজ।
জাতীয় নির্বাচক কমিটির একজন সদস্য গতকাল জানান,টি২০-তে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মুশফিককেও বিশ্রামে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোরও সায় আছে বোর্ডের এই পরিকল্পনায়।তাই নির্বাচক কমিটির দিক থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে বিসিবি সভাপতিকে রাজি করাতে।কারণ জিম্বাবুয়ে সফরটিকে দেখা হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিরিজ হিসেবে।মূলত ব্যাটিং লাইনআপ ঠিক করতেই অপেক্ষাকৃত তরুণ ক্রিকেটারদের ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা কোচিং স্টাফের।জাতীয় দল নির্বাচক কমিটির নির্দেশনায় সেভাবে স্কোয়াড গড়ছেন নির্বাচক প্যানেল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিনিয়রদের মধ্যে কেবল মুশফিকুর রহিম ছিলেন না।হজ পালনের জন্য সফর থেকে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি।জিম্বাবুয়ে সফর দিয়ে জাতীয় দলে ফেরার কথা তার।বিসিবি সভাপতি পাপনের সঙ্গে সেভাবেই কথা বলা আছে মুশফিকের।তবে মুশফিক নিজে থেকেও টি২০ ছেড়ে দিতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।সবকিছুই আসলে নির্ভর করছে বিসিবি সভাপতি পাপনের ওপর।পাপন এই পরিকল্পনা মেনে নিতে রাজি না হলে হতাশ হবেন পরিচালকদের একাংশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির একজন কর্মকর্তা বলেন,মাহমুদউল্লাহ গত পাঁচ বছরে এমন কী করেছে যে, টি২০ দলে রাখতে হবে।নিজেরা তো পারফর্ম করছেই না, উল্টো দলকে এলোমেলো করে দিচ্ছে।নিজেরা টিকে থাকার জন্য জুনিয়রদের সব সময় চাপে রাখে তারা।আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মাহমুদউল্লাহকে বাদ দিতে এত ভয় কিসে? ওকে জিম্বাবুয়ে সফরে নিতে হলে বিশ্বকাপ দলেও থাকবে।তেমন কিছু ঘটলে খুবই খারাপ হবে।
জিম্বাবুয়ে সিরিজটি দল গোছানোর হলেও একেবারে নতুন মুখ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। জাতীয় দলের পরিচিত মুখদের নেওয়া হবে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে।ব্যাটার ইয়াসির আলী রাব্বি এবং পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকেও জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য ফিট করার চেষ্টা করছে বিসিবি মেডিকেল বিভাগ।রাব্বি ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন।আর সাইফউদ্দিনকে দিল্লি পাঠানো হচ্ছে কোমরে ইনজেকশন নেওয়ার জন্য।ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় ভারত যাওয়াও বিলম্ব হচ্ছে কিছুটা।আজ জানা যাবে দিল্লি কবে যেতে পারবেন এ পেসার।
সাইফউদ্দিন জানান,ফিল্ডিং এবং ব্যাটিং নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।বোলিংয়ের সময় কিছুটা ব্যথা অনুভব করেন তিনি।ইংল্যান্ডের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ইনজেকশন নিতে বলা হয়েছে তাঁকে।তবে এ দু’জনকে দলে নেওয়া না নেওয়া নির্বাচকদের ব্যাপার।বাংলাদেশ টাইগারে ভালো করায় পেসার হাসান মাহমুদকে দলে ফেরানো হতে পারে।টেস্ট এবং ওয়ানডের পর টি২০-তেও নিয়মিত করা হতে পারে মেহেদী হাসান মিরাজকে।এদিকে অসুস্থতার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেতে না পারলেও জিম্বাবুয়ে যাচ্ছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিরিজে কোচিং স্টাফের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশ্বকাপের দল গোছাতে সাহায্য করবেন তিনি।