বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ডের মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট কাটে নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সেই অসাধারণ পারফরম্যান্স বিশ্বকাপের মূল মঞ্চেও ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী করে তুলে নেদারল্যান্ডসকে। দলটির কোচ রায়ান কুক তো সেমিফাইনালের স্বপ্নের কথাও শুনিয়েছেন। বলেছেন গ্রুপ পর্বের ৯ ম্যাচের অন্তত ছয়টিতে জেতার কথা। কিন্তু গ্রুপপর্বে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচেই বড় একটা ধাক্কা খেয়েছে ডাচদের সেই স্বপ্ন। ৬ অক্টোবর হায়দারাবাদে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা পাকিস্তানের কাছে হেরেছে ৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে।
আজ দ্বিতীয় রাউন্ডে তাই নিশ্চিতভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু পরাজয়ের বেদনা ভুলে জয়ের স্বপ্ন আঁকতে গিয়ে হয়তো দ্বিধাদ্বন্দ্বের সঙ্গেই লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ যে শিরোপাপ্রত্যাশী নিউজিল্যান্ড। যারা আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে একপ্রকার উড়িয়ে দিয়েছে। ৮২ বল হাতে রেখেই জিতেছে ৯ উইকেটে। সেটাও ২৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে।
দাপুটে জয় দিয়ে শুরু করা নিউজিল্যান্ডের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করা নেদারল্যান্ডস—আজ হায়দরাবাদে লড়াইটা কেমন হবে, এ থেকে খানিকটা অনুমান করাই যায়। ধারণা পেতে সাহায্য করবে অতীত পরিসংখ্যানও। দুই দল এ পর্যন্ত ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে চার বার। সেই চার বারই অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। কিউইদের সামনে ডাচরা লড়াইও গড়তে পারেননি। এই চার সাক্ষাতের একটি ছিল বিশ্বকাপে। ১৯৯৬ সালে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে আসা নেদারল্যান্ডস পড়েছিল নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বি গ্রুপে। তো ১৯৯৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের বারোদায় দুই দলের মুখোমুখি সেই সাক্ষাতে নিউজিল্যান্ড জিতেছিল ১১৯ রানে। প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেটে ৩০৭ রানের জবাবে নেদারল্যান্ডস পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে করতে পেরেছিল মাত্র ১৮৮ রান।
যদিও সেই ম্যাচের স্মৃতি হয়তো দুই দলের খেলোয়াড়দের কারো মনেই নেই। এবারের বিশ্বকাপে খেলতে আসা নিউজিল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বেশির ভাগ ক্রিকেটারের যে তখন জন্মও হয়নি। যাদের জন্ম হয়েছিল তারাও যে খুব ছোট ছিলেন, সেটি স্পষ্টই। কাজেই ২৭ বছর আগের একটা ম্যাচের স্মৃতি তাদেরও মনে থাকার কথা নয়। তবে আরেক বার বিশ্বকাপ মঞ্চে মুখোমুখি হওয়ার আগে দুই দলের ক্রিকেটাররাই হয়তো ‘হোম ওয়ার্ক’ সেই ম্যাচের পরিসংখ্যান নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে থাকবেন।
সেই হোমওয়ার্ক করুক বা না করুক, দুই দলই যে একমাত্র জয়ের পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামবে, সেটা না বললেও চলে। তবে জয়োত্সব করতে হলে নেদারল্যান্ডসকে আগে বদলাতে হবে ইতিহাস। কিউইদের বিপক্ষে শতভাগ হারের ইতিহাস বদলে লিখতে হবে জয়ের ইতিহাস। স্কট অ্যাডওয়ার্ডসের দল পারবে হায়দরবাদে নতুন ইতিহাস লিখতে? নাকি নিউজিল্যান্ডই আরেকটি সহজ জয়ে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে যাবে আরও একধাপ?