সাকিব আল হাসান ও জশ বাটলার। আজ বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের মধ্যকার দ্বৈরথের দুই সেনাপতি। ধর্মশালায় আজকের মাঠের দ্বৈরথে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব ও ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলারের লড়াইটা হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয়।
এমনিতে দুজনের মধ্যে আসলে তুলনা চলে না। সাকিব নিখাঁদ অলরাউন্ডার। ব্যাটিং-বোলিং, দুটিতেই সমান পারদর্শী। বিশেষ সুনাম আছে ফিল্ডার সাকিবেরও। পাশাপাশি বয়, ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা, অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা, রান—সবদিক থেকেই এগিয়ে সাকিব। ২৪১টি ওয়ানডে খেলে ৩৬ বছর বয়সি সাকিব করেছেন ৭৩৯৮ রান। উইকেট নিয়েছেন ৩১১টি। বিপরীতে জশ বাটলারও অল-রাউন্ডার ক্যাটাগরিতেই পড়েন। তবে তিনি ব্যাটসম্যান কাম উইকেটরক্ষক। ব্যাট হাতে রান করার পাশাপাশি গ্লাভস হাতে নৈপুণ্য প্রদর্শনের কারিগর। ৩৩ বছর বয়সি বাটলার ১৭০টি ওয়ানডে খেলে রান করেছেন ৪৮৫৬। সঙ্গে গ্লাভস হাতে ১৫৪টি ডিসমিসালের মালিক (ক্যাচ-স্টাম্পিং)।
বিশ্বকাপ এবং অধিনায়কত্বের পরিসংখ্যানেও সাবিক যোজন এগিয়ে। সাকিবের এটা পঞ্চম বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত খেলেছেন ৩০টি ম্যাচ। তাতে করেছেন ১১৬০ রান, উইকেট নিয়েছেন ৩৭টি। এই ৩০ ম্যাচের মধ্যে সাকিব নেতৃত্ব দিয়েছেন ৮ ম্যাচে। তাতে জয়-পরাজয় সমান ৪টি করে। অন্যদিকে বাটলারের এটা তৃতীয় বিশ্বকাপ। এবারের উদ্বোধনী ম্যাচসহ বিশ্বকাপে তিনি খেলেছেন মোট ১৮টি ম্যাচ। তাতে ব্যাট হাতে করেছেন ৪৯৬ রান, গ্লাভস হাতে ২১টি ডিসমিসালের মালিক। বিশ্বকাপে এবারই প্রথম অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। আর এই অধ্যায়ের শুরুটা হয়েছে অসহায়ত্বের হার দিয়ে। উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের বিষয়টি বাটলার নিজেই হয়তো যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইবেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৭টি ওয়ানডে খেলে সাকিব রান করেছেন ৫৪০, উইকেট নিয়েছেন ২০টি। এখানেও বাটলার পিছিয়ে। তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯টি ওয়ানডে খেলেছেন। তাতে করেছেন ৩৯৫ রান, সঙ্গে ডিসমিসাল ১৪টি। তবে এসব পরিসংখ্যানিক পার্থক্য গুছিয়ে দুজনকে একটা বিন্দুতে মিলিয়ে দিয়েছে এবারের বিশ্বকাপে তাদের নিজ নিজ দলের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে সাকিব এবং বাটলার, দুজনেই ছিলেন নিজ নিজ দলের দ্বিতীয় সেরা পারফরমার।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড বড় ব্যবধানে হারলেও দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন বাটলার। বিপরীতে সাকিবও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬ উইকেটের জয়ের দ্বিতীয় সেরা পারফরমার ছিলেন। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছেন ১৪ রান। তার চেয়েও বড় কথা, আফগানদের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে অধিনায়কত্ব দিয়েও ক্রিকেটপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছেন সাকিব। ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ডেল স্টেইন পর্যন্ত তার অধিনায়কত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। পরিসংখ্যানের সব পৃষ্ঠাতেই এগিয়ে যিনি, আজও কি প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সঙ্গে মাঠের দ্বৈরথে সেই সাবিকই বিজয়ী হবেন?